ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

দুর্নীতিতে এক ধাপ এগিয়েছে সরকার, দাবি গয়েশ্বরের

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
দুর্নীতিতে এক ধাপ এগিয়েছে সরকার, দাবি গয়েশ্বরের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ঢাকা: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ‘দুর্নীতির ধারণা সূচকে’ (সিপিআই) বাংলাদেশ ১৩ নম্বর নম্বরে থাকার বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এতে সরকারের সন্তুষ্ট হওয়ার কথা নয়। দুর্নীতিতে একধাপ এগিয়ে তারা ১৩তম হয়েছে।



বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর  মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা অনেক চুপ থেকেছি। কয়েকদিন আগে দলের প্রধান খালেদা জিয়ার নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। নেত্রী যখন একটা কথা বললেন, আমরা তখন সবাই মুখে তালা মারলাম। তার সমর্থনে কেউ কোনো কথা বললাম না। অপরদিকে, ভাল হোক মন্দ হোক শিয়ালের মতো সব এক সুরে কথা বলে। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমাদের নেত্রী যখন কথা বলেন, তখন মামলার ভয়ে আমরা তার কথা সমর্থন করি না। তাই আমাদের বিবেচনা করতে হবে বিএনপির রাজনীতি করার যোগ্যতা আমাদের আছে কিনা।

মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটূক্তি করায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার প্রতিবাদ ও ঘৃণা সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ হবে। কথায় কথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা, সত্য কথায় রাষ্ট্রদ্রোহিতা আর মিথ্যা কথায় দেশপ্রেম। এই নীতিতে বিশ্বাস করি না। সত্য যত নিমর্ম হোক, সত্য সত্যই। ইতিহাস সঠিকভাবে লিখতে হয়। কে কতো লাখ বললো, এটা বড় কথা নয়।

এসময় গুনে গুনে ৩০ লাখ শহীদের নামও পত্রিকায় প্রকাশ করার দাবি জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য। তিনি বলেন, নাম প্রকাশের পর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যত মামলা পারেন করেন।

গয়েশ্বর আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদের নামের তালিকা যদি জনগণের সামনে উপস্থিত করতে পারেন, তারপর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যত খুশি মামলা করেন। ৩০ লাখ হোক বা ৬০ লাখ হোক শহীদদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব আছে। তাদের তালিকা থাকবে না কেন। কী কারণে থাকবে না? এই শহীদদের নাম উল্লেখ করে এলাকায় এলাকায় স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করতে হবে।   শহীদ পরিবার আমাদের কাছে অধিকার রাখে তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের ভাল মন্দ দেখার। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করার। এজন্য সরকারকে বলবো, মামলা-টামলা যা দেন, লাভ হবে না।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যা বলছে, তাতে সরকারের সন্তুষ্ট হওয়ার কথা নয়। দুর্নীতিতে একধাপ এগিয়ে তারা ১৩তম হয়েছে। একধাপ এগিয়ে আছে; সেটা কি আজিমপুরের দিকে না, না কোন দিকে, তা জনগণের দেখার বিষয়।
 
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর বলেন, নিজে ভাল থাকার জন্য মামলার ভয়ে কৌশল অবলম্বন না করে বুক টান করে রাজপথে হাটুন। নেত্রীর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। আমরা যত চুপ করে থাকি না কেন, মামলা আমাদের ছাড়বে না। সহকর্মীদের গুমের মিছিল অনেক বড় হয়ে গেছে। শহীদদের রক্তের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। নিখোঁজ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। রক্ত ও জীবন দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

পরে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ড. আব্দুল মঈন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক  আব্দুল লতিফ জনি, তাইফুল ইসলাম টিপু , নির্বাহী কমিটির সদস্য মুন্সি বজলুর বাসিত আঞ্জু প্রমুখ।

কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়ায় মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০১৬
এমএম/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।