ঢাকা: সারাদেশে একটা ‘ফ্যাসিস্টরাজ’ চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৭ জুন) রাজধানীর জামিয়া মাদানিয়া বারিধারায় আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সারাদেশে আজ একটা ফ্যাসিস্টরাজ চলছে, দমননীতি চলছে, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে খুন-গুম-অপহরণ করে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।
কারাগারে রয়েছেন নির্ভিক সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদ; যিনি তিনবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কারাগারে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। কারাগারে রয়েছেন আরেকজন নির্ভিক সাংবাদিক-যিনি সারাজীবন স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের কথা বলেছেন-লিখেছেন সেই প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান, বলেন বিএনপির মহাসচিব।
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এবার কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায়নি। সাধারণ মানুষ তাদের জীবিকা জোগাড় করতে পারছে না। ব্যবসায়ীরা বলেছেন-এবার তাদের ব্যবসা ভালো যাবে না। কারণ, যে করের বোঝা তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা সেটা বহন করতে সক্ষম হবেন না।
দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, আজ হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদেরকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার আইনবিরোধী উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়দিনে যে ১২ হাজার লোক গ্রেপ্তার হয়েছে তা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী। কারণ, কয়দিন আগে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন, বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। অথচ ১২ হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিনা ওয়ারেন্টে। এর মধ্যে, তারা জঙ্গি খুঁজে পেয়েছে ১৩২ জন। তাহলে এই ১২ হাজার মানুষ কারা?
ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে তাদের এই অভিযান। সাম্প্রতিক সময় যে গুপ্তহত্যা হচ্ছে, এর পেছনে ষড়যন্ত্র আছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায়, এখন পর্যন্ত একজনকেও গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে পারেনি কেন?
গত দেড় বছরে প্রায় ৪৮ জনকে মেরে ফেলা হয়েছে। ক্রস ফায়ারে আমার ভাইদেরকে মেরে ফেলা হচ্ছে- তার কোনো জবাবদিহীতা নেই। পার্লামেন্টেও এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয় না কেন?-জানতে চান তিনি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মোস্তফা আযাদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান পেশয়ারী, এনডিপির চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মণি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুল বুল চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন প্রমুখ, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম।
এছাড়া আয়োজক সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসেন কাশেমী, সহ সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফি, যুগ্ম মহাসচিব বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, নাজমুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২২ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৬
এজেড/জেডএস