ঢাকা: দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সংগঠিত করার মাধ্যমে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে চলমান গুপ্তহত্যা বন্ধের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে ক্ষমতাসীন ১৪দলের নেতাকর্মীরা।
রোববার (১৯ জুন) রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১৪দলের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
অব্যাহত গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস ও দেশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ১৪দল সারাদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
রাজধানীতে কেন্দ্রীয়ভাবে গাততলী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত দীর্ঘ মানববন্ধন রচনা করা হয়।
এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে ১৪দল নেতারা অব্যাহত গুপ্তহত্যার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জড়িত থাকার অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ মদদে ও অর্থায়নে এ গুপ্তহত্যা চালানো হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্য নাকোচ করে দিয়ে ১৪দলের নেতারা বলেছেন, বিএনপিকে আগে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে এবং অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমতা চাইতে হবে। তারপর জাতীয় ঐক্য হবে কি হবে না চিন্তা-ভাবনা করা হবে।
গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে গুপ্তহত্যা বন্ধ করতে ১৫ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে গণ প্রতিরোধ সপ্তাহ ঘোষণা করা হয়।
রোববার (১৯ জুন) বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, ১৪দলের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত এ মানববন্ধনে নেতাকর্মী অংশ নিয়ে গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সামনে ১৪দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।
এখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ১৪দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খুনিদের অস্ত্র, বোমার চেয়ে বড় শক্তি বাংলার জনগণ। গুপ্তহত্যার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি ১৫ জুলাই থেকে ২১ জুলাই সারা দেশে গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, শহর থেকে শুরু করে গ্রাম-গঞ্জে এ গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি পালিত হবে। ১৪দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের বিষয়য়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়াকে আগে ঘোষণা করতে হবে জামায়াতের কোনো সম্পর্ক থাকবে না। গুপ্তহত্যার প্রতিবাদ করবেন এবং অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য জাতির কাছে ক্ষমতা চাইতে হবে। তখন চিন্তা করে দেখবো আপনারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা যায় কি না। কোনো খুনির সঙ্গে আমরা বসতে পারি না।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, দেশে একটি সাম্প্রদায়িক আবহাওয়া তৈরির চেষ্টা চলছে। এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মাধ্যমে অতীতের মতো গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে গুপ্তহত্যা বন্ধ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া গুপ্তহত্যায় মেতে উঠেছে। দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য খালেদা জিয়া গুপ্তহত্যায় মেতে উঠেছেন। বিএনপি-জামায়াত গুপ্তহত্যার নেতৃত্ব দিচ্ছে। খালেদা জিয়া বলেছেন জাতীয় ঐক্য না হলে গুপ্তহত্যা বন্ধ হবে না। এর মানে বিএনপি গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িত এটা প্রমাণ করে। এদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। আমরা জনগণকে সংগঠিত করে প্রতিরোধ গড়ে তোলার মাধ্যমে গুপ্তহত্যা বন্ধ করতে পারবো।
আরও বক্তব্য রাখেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জাসদের (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক শিরিণ আক্তার, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টির অসিত বরণ রায় প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৬
এসকে/এসএইচ
**১৫-২১ জুলাই ১৪ দলের গণপ্রতিরোধ সপ্তাহ কর্মসূচি
**গুপ্তহত্যা বন্ধে অ্যাকশনধর্মী কর্মসূচি চান কাদের