ঢাকা: প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনায় যেতে চায় না আওয়ামী লীগ। এ কারণেই বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বানকে গুরুত্ব দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন দলটি।
সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার জন্য সরাসরি বিএনপিকে দায়ী করছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। এছাড়া জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ঐক্য থাকলে কখনই বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয় বলেও তারা মনে করেন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, যে চলমান গুপ্তহত্যার ইস্যুতে বিএনপির নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলছেন এর পেছনে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে বিএনপি এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠী জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির ঐক্য অটুট রয়েছে। চলমান গুপ্তহত্যার সঙ্গে জামায়াত প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। জামায়াতের সঙ্গে যে দলের ঐক্য সেই দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা বা ঐক্যের কথা আওয়ামী লীগ চিন্তা করে না।
সারা দেশে চলমান গুপ্তহত্যা বন্ধের জন্য গত কয়েক দিন ধরে বিএনপির নেতারা জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আসছেন। তারা বলেছেন, জাতীয় ঐক্য না হলে চলমান গুপ্তহত্যা বন্ধ করা সম্ভব না। গুপ্তহত্যা বন্ধের জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন।
বিএনপির নেতাদের আহ্বান সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে আ’লীগ নেতারা বলছেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বিএনপি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপতৎপরতার আশ্রয় নিয়ে চলেছে। এই গুপ্তহত্যাও তারই একটা অংশ। এর আগে আন্দোলনের নামে বার বার নানাভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে কখনও যানবাহনে আগুন, কখনও পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে।
এসব কর্মকাণ্ডে বিএনপি কখনও সরাসরি যুক্ত থেকেছে, কখনও জামায়াতসহ বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীকে মদদ নিয়ে কাজে লাগাচ্ছে। সরকার উৎখাত করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাদের একের পর এক ষড়যন্ত্র সরকারকে প্রতিহত করতে হচ্ছে। আন্দোলনের নামে গত বছরের শুরুতে ৯৩ দিন অবরোধ করেছে। পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করেছে। সরকার শক্ত হাতে তা প্রতিহত করেছে। গুপ্তহত্যাও বন্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
গুপ্তহত্যাকারীদের আড়াল করতে বিএনপি নেতারা সরকারের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছে। এখন জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। এই অবস্থায় বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের ঐক্য বা আলোচনায় বসার প্রশ্নই ওঠে না বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান।
জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় ঐক্য তো আছেই। আমাদের ১৪ দল আছে, তাদের (বিএনপির) ২০ দল আছে। জাতীয় ঐক্যের আর দরকার কী? বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া তার ছেলে তারেক রহমানকে থামালেই গুপ্তহত্যা বন্ধ হয়ে যাবে। গুপ্তহত্যার সব চাবিকাঠি তারেকের হাতে।
এদিকে বুধবার (২২ জুন) ১৪ দলের সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুপ্তহত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। পাকিস্তানের প্রেতাত্মা খালেদা জিয়া ক্ষমতার লিপ্সায় গুপ্ত হত্যা করছেন। সাড়াশিঁ অভিযানের মাধ্যমে অনেক জঙ্গি ধরা পড়ছে। বিএনপি বুঝতে পেরেছে গুপ্তহত্যার পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই তারা এখন জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, হত্যাকারীরা যখন বিপদে পড়ে তখন তাদের পক্ষে খালেদা জিয়া ও বিএনপি নেতারা কথা বলেন। গণতন্ত্রকে হত্যা ও রাষ্ট্রকে বিপদের মধ্যে ফেলতে তারা গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠায় এখন আন্তর্জাতিক চাপে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। দেশবিরোধীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা, ঐক্য হতে পারে না।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ/