ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘জামায়াত নেতাকে বহিষ্কারে ব্রিটেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
‘জামায়াত নেতাকে বহিষ্কারে ব্রিটেনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

লন্ডন: হাউস অব কমন্সের সেমিনার থেকে জামায়াত নেতা ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লাকে বের করে দেওয়ায় বাংলাদেশ নয়, ব্রিটেনেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন বয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় পূর্ব লন্ডনের বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সেমিনারে যোগদান করতে আসা প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্য বিএপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী।

এক প্রশ্নের উত্তরে জামায়াত নেতা আবু বকর মোল্লাকে মঙ্গলবারের (১৯ জুলাই) ওই সেমিনার থেকে বের করে দেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ব্রিটেনের সঙ্গে এ বিষয়টি মানায় না। এটি কাম্যও ছিলো না। এ ঘটনায় বাংলাদেশ নয়, ব্রিটেনেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।  

তবে জামায়াত নেতা আবু বকর মোল্লা সেমিনার থেকে বহিষ্কারের কথা অস্বীকার করে তিনি সেমিনার বয়কট করেছেন বারবার এমন মন্তব্য করে আসছেন। ফলে বিএনপি মহাসচিবের বহিষ্কারের নিন্দা জামায়াত নেতার ওই বয়কটের কথাটি মিথ্যে প্রমাণ করলো।

আবু বকর মোল্লা বক্তা হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন না- সেমিনার কর্তৃপক্ষের এমন মন্তব্য সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি তারা মিথ্যে বলছেন। আমি নিজে জানি, জামায়াত নেতা আমন্ত্রিত ছিলেন। একজন আমন্ত্রিত অতিথিকে সেমিনার থেকে বের করে দিয়ে তারা গণতন্ত্রের অবমাননা করেছেন, বাক স্বাধীনতা হরণ করেছেন'।

তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারের হাইকোর্টের কারাদণ্ড ও জরিমানার রায় সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব এটিকে রাজনীতি থেকে তারেককে সরিয়ে রাখার অপচেষ্টা বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‌‘এ মামলার ঘটনার সঙ্গে তারেক রহমানের কোনোই সম্পর্ক নেই প্রমাণিত হওয়ার পরও তাকে এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু তারেক রহমানই নয়, বিএনপির চেয়ারপার্সন তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক হয়রানির কারণে দেশের কারাগারগুলোতে আজ আর তিল ধারণের জায়গা নেই। সরকারের সমালোচনা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় ঢোকানো হচ্ছে জেলে’।

সাম্প্রতিক সময়ে উগ্রবাদী সন্ত্রাসের উত্থানের কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা বারবার বলছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এগুলোর সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু তা না করে কোনো কিছু ঘটলেই বিএনপিসহ বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছেন প্রকৃত অপরাধীরা’।

গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার পর আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি দেশের জন্যে অশনি সংকেত।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি উদার গণতান্ত্রিক দেশ। এদেশের মানুষ গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িকতা ও পারস্পরিক সহাবস্থানে বিশ্বাস করে’।

এসব এড়িয়ে গিয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদী সন্ত্রাসের দায় দেশের বিরোধী দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তার মতে, বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে অভিযুক্ত করার চেষ্টা হাস্যকর।

‌‘বিশ্বের যেসব দেশ সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে আমরা তাদের পরিণতি দেখতে পাচ্ছি’- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আর একারণেই দেশের ভবিষ্যত নিয়ে মানুষ আজ শঙ্কিত। রাজনৈতিক সংকীর্ণতা পরিহার করে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে দেশের মানুষের এ শঙ্কা দূর করতে হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এসএপি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।