ফেনী থেকে: ফেনীর রাজনীতি এখন নিয়ন্ত্রিত হয় নিজাম হাজারীর পুকুরপাড়ের বৈঠকখানায়। এমন কথাই শোনা গেল জেলা-শহরের সাধারণ মানুষের মুখে।
শহরের ট্রাংক রোড়ের একটি হোটেলে মোরশেদ উল্লাহ নামের দুবাইফেরত এক যুবকের সাথে কথা হয় বাংলানিউজের।
মোরশেদ ফেনীর বর্তমান রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘এই জেলার রাজনীতি এক সময় ঘরে বসে জয়নাল হাজারী এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন এ জেলার রাজনীতি নিজাম হাজারীর পুকুরপাড়ের বৈঠকখানায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ’’
এ বৈঠকখানায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মনোনয়নের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে দাবি করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা।
জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা বাংলানিউজের কাছে দাবি করে বলেন, ‘‘উপজেলা নির্বাচনের আগে এই পুকুরঘাটেই একাধিক বৈঠক করেন নিজাম হাজারী। ওইসব বৈঠকেই আলোচনার মধ্য দিয়ে তার অনুসারীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেন তিনি। ’’
একইভাবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারেও নাকি নিজাম হাজারী এভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন।
তার অনুসারী জেলার ৪৯টি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে এভাবেই পুকুরপাড়ের বৈঠকখানায় বসেছিলেন তিনি।
জেলার আরেক প্রভাবশালী নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘‘মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে জয়নাল হাজারীর অনুসারীরা থেকেছেন অবহেলিত। ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিই শুধু নয়, সেই সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় নেতাদেরও নিয়ন্ত্রণ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। ’’
জানা যায়, বিএনপি নেতারা কোনো সভা-সমাবেশ, এমনকি বড় কোনো পারিবারিক অনুষ্ঠান করার আগেও নাকি নিজাম হাজারীর দ্বারস্থ হন।
শুধু রাজনীতিই নয়, ফেনী শহরে নিজেদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বিএনপি-জামায়াতের নেতাদেরও নাকি নিজাম হাজারীর পুকুরঘাটের বৈঠকে হাজির হতে দেখা যায়।
ফেনীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র এই মাস্টারপাড়া। একসময় জয়নাল হাজারীও এখান থেকেই ফেনীর রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ ব্যাপারে কথা হয় মাস্টারপাড়ার আওয়ামীগ সমর্থক হেদায়েত উল্লাহর সাথে।
তিনি বলেন, ‘‘আগে ফেনীর রাজিনীতি নিয়ন্ত্রণ করা হতো জয়নাল হাজারীর বাসভবন থেকে। সেখানে ছিল টর্চার (নির্যাতন) সেলও ছিল। ’’
তবে বর্তমান এমপি সকল সিদ্ধান্তই নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই নেন বলে জানান হেদায়েত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, ১৩ আগস্ট, ২০১৬
জেএম/