ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় প্রধান আসামি বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন পিছিয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিনও ধার্য করা হয়েছে একইদিন।
ওইদিন খালেদা জিয়াকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির বিচারিক কার্যক্রম চলছে এ আদালতে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৩৪২ ধারায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য থাকলেও তার অনুপস্থিতিতে সময়ের আবেদন জানান আইনজীবীরা। আবেদন মঞ্জুর করে প্রথমে ০১ সেপ্টেম্বর ও পরে আসামিপক্ষের আবেদনে ৩১ আগস্ট পুনর্নির্ধারণ করেন আদালত।
এরপর শুরু হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষীদের আসামিপক্ষের জেরা ও নতুন সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ। মামলার ২২তম সাক্ষী সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপ্যাল অফিসার সোহরাব হোসেন ও ২৩তম সাক্ষী বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ইউএনও শাহ রেজওয়ান হায়াতকে জেরা করেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান ও অ্যাডভোকেট বোরহানউদ্দিন।
নতুন করে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৪তম সাক্ষী প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি আমজাদ হোসেন, ২৫তম সাক্ষী প্রাইম ব্যাংকের ভিপি মোল্লা ফরিদ আহমেদ ও ২৬তম সাক্ষী সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত খন্দকার আব্দুস সাত্তার।
তাদেরকে জেরা ও পরবর্তী সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন আগামী ৩১ আগস্ট ধার্য করেছেন আদালত।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন। তারা আদালতে হাজির ছিলেন এবং খালেদা ও তারেক রহমানের পক্ষে তাদের আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন।
অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। অপর তিন আসামি হলেন- খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক, বাকি দু’জন জামিনে আছেন।
মামলাটিতে সাক্ষ্য দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর রশিদসহ মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।
২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৪ সালের ১৯ মার্চ দুই মামলায় খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ঢাকা তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের আগের বিচারক বাসুদেব রায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৬
এমআই/এএসআর