ঢাকা: ‘এতোদিন সংশয়ে ছিলাম, জাতীয় পার্টি বাঁচবে কি-না, দল থাকবে কি-না, আমি বাঁচবো কি-না! কিন্তু এখন সেই সংশয় দূর হয়ে গেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
এরশাদ বলেন, ‘তোমাদের এই উপস্থিতি প্রমাণ করে, জাতীয় পার্টি বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে।
রোববার (২৮ আগস্ট) দুপুরে আইডিইবি মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির যৌথ সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।
এরশাদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে তিনশ’ আসনে প্রার্থী দেবো। আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি, এখনই এলাকায় গিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হও’।
এরশাদ বলেন, ‘আমরা কারো সঙ্গে হাত মেলাতে যাবো না। কেউ হাত মেলাতে এলে হাত মেলাবো কি-না, আমরা নির্ধারণ করবো। তবে দুর্বলের সঙ্গে কেউ ঐক্য করতে আসেন না। শক্তি থাকলে সবাই তোমাদের ভালোবাসবেন, সম্মান করবেন। এজন্য শক্তি সঞ্চার করতে হবে’।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের প্রতি আমার নির্দেশ থাকল, এলাকায় গিয়ে দলকে শক্তিশালী করো। আজকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাও, দলকে শক্তিশালী করবে’।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি যতো উন্নয়ন করেছে, আর কোনো দল এতো উন্নয়ন করেনি। এসব কথা মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে। তারা ভুলে যায়নি, সেসব কথা। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় গেলে জঙ্গিমুক্ত, বেকারমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ হবে।
কথা বলতে বলতে কিছুটা আবেগ কাতর হয়ে পড়েন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘তোমাদের কথা দলের কথা ভেবে আমি সন্তানকে একা ফেলে বাইরে চলে যাই। ছেলেটি একা থাকে বাসায়। মা নেই। এরিখের কথা বলছি। ওর কথা ভেবে কষ্ট লাগে। তোমরা আমার সন্তান। জাতীয় পার্টি আমার সন্তান। তোমাদের মাঝে বেঁচে থাকতে চাই’।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আমরা জাতীয় পার্টির রাজনীতি করি। এরশাদের রাজনীতি করি। আপনার (এরশাদ) নামের ওপর রাজনীতি করি। আপনি আছেন, আমাদের রাজনীতি আছে। আপনি নেই, আমাদের রাজনীতি নেই। আমরা মন্ত্রিসভায় আছি। আপনি যখন বলবেন, তখন ছেড়ে দিয়ে আসবো’।
চুন্নু বলেন, ‘আগামীতে যদি জোটের প্রশ্ন আসে, সেক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে জোট করতে পারে না। জোট হতে হলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে হওয়া উচিত। তবে জোট করতে হলে যেন ন্যায্য হিস্যা আদায় করা হয়। জাতীয় পার্টি যেন সম্মানিত অবস্থানে থাকে’।
যৌথসভায় সারা দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, মহানগর, পৌর কমিটির নেতারা অংশ নেন। সভায় বক্তব্য দেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, যুব সংহতির সভাপতি অ্যাড. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০১৬
এসআই/এএসআর