ঢাকা: জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বৃহস্পতিবার (০১ ডিসেম্বর) রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি এ দাবি করেন।
এর আগে এ মামলায় দেওয়া ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যের সারমর্ম খালেদা জিয়াকে পড়ে শোনান বিচারক। এরপর তিনি মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার বক্তব্য জানতে চান।
এ সময় খালেদা জিয়া নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন। সাফাই সাক্ষী দেবেন কি-না বিচারক জিজ্ঞাসা করলে খালেদা বলেন, তার পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেওয়া হবে।
মামলার এ পর্যায়ে খালেদা জিয়ার কিছু বলার আছে কি-না জিজ্ঞাসা করেন আদালত। এ সময় তার লিখিত বক্তব্য আদালতকে পড়ে শোনান তিনি।
আদালতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মাস, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শুরুতেই মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, তাদের অবদানের কথা স্মরণ করে আমার কথা শুরু করছি’।
‘এদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ছিল আমাদের স্বাধীনতার লক্ষ্য। সে সকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ অকাতরে জীবন দিয়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন। স্বাধীনতার সেসব লক্ষ্য আজ পদদলিত’।
খালেদা বলেন, ‘সারা জাতি আজ লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত। সমগ্র বাংলাদেশকেই আজ এক বিশাল কারাগার বানানো হয়েছে। সবখানেই চলছে অস্থিরতা ও গভীর অনিরাপত্তাবোধ। মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ মুহূর্তে কারাগারে বন্দি’।
‘বিএনপির প্রায় ৭৫ হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারা নির্যাতন ভোগ করেছেন। আমাদের দলের ৪ লাখেরও বেশি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২৫ হাজারের মতো মামলা দাযের করা হয়েছে। নির্যাতন, হয়রানি ও গ্রেফতারের ভয়ে বহু নেতাকর্মী ঘরে থাকতে পারেন না’।
গুম, খুন, অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মী। তাদের ঘরে ঘরে আজ কান্নার রোল’।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখন সংবিধান ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বড় বেশি বলা হয়। কিন্তু কোথায় আজ সাংবিধানিক শাসন? আমাদের সংবিধান নাগরিকদের যেসব অধিকার দিয়েছে কোথায় আজ সেসব অধিকার? কোথায় আজ সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার?’
মামলার এ পর্যায়ে খালেদা জিয়া তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কপি (বিচারক যা খালেদা জিয়া পড়ে শোনান) আদালতের কাছে দাবি করেন। এ কপি পাওয়ার পর তিনি বাকি বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করবেন বলেও আদালতকে জানান। কিন্তু এ কপি দেওয়ার বিধান না থাকায় বিচারক তা সরাসরি নাকচ করে দেন।
তবে অসুস্থতার জন্য খালেদা জিযা আদালত মুলতবি চাইলে বিচারক তা মঞ্জুর করে আগামী ০৮ ডিসেম্বর বাকি বক্তব্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০১, ২০১৬
এমআই/এএসআর