ফুল হাতা টি শার্ট, কালো রঙের প্যান্ট আর ক্যাডস পড়ে হাস্যোজ্জ্বল মন্ত্রী নিজের স্টাইলেই তার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন। খানিক সময় দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় করলেন।
মন্ত্রীর বিনয়ী আচরণে তার চোখ যেন ছানাবড়া। আর হবেই বা না কেন, তার সকালটাই যে শুরু হলো একজন মন্ত্রীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে।
মাথায় টুপি মুড়িয়ে, জীর্ণ শার্ট আর লুঙ্গি পড়ে কোদাল হাতে কাজের সন্ধানে ছুটছিলেন এক বয়োবৃদ্ধ। তাকেও কাছে টেনে নিলেন সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নিজেই হাত মেলালেন।
জীবনের পড়ন্ত বেলায় মন্ত্রীর কাছ থেকে এমন সম্মান পেয়ে রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে উঠলেন এ বৃদ্ধ। বললেন, এমন মন্ত্রী তো এই দেশে বিরল!
শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ফেনীতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভোর সকালের দিনলিপি ছিল এমনই।
তৃণমূলের মাটি ও মানুষের সঙ্গে মন্ত্রীর সেতুবন্ধন রচনার এসব ছবি মন্ত্রী নিজেও তার ফেসবুক ওয়ালে আপলোড করেছেন। পরবর্তীতে এসব ছবি ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
শুধু কী তাই ফেনী সার্কিট হাউজের জগন্নাথ দিঘীর সড়কের পাশেই সাধারণ একটি হোটেলে সকালের নাস্তা সারেন মন্ত্রী। তার সঙ্গে নাস্তা করেছেন এ মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনও।
আর মন্ত্রীর সকালের নাশতার মেন্যুতেও ছিল না কোনো বাহারি আইটেম। হোটেলের সস্তা পুড়ি, পরোটা আর ভাঁজিতেই নাস্তা করেছেন। চায়ের কাপে চুমুক দিয়েছেন।
মন্ত্রীকে দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়া খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ যারাই এসেছেন তাদের হাতেও পুড়ি বা পরোটা তুলে দিয়েছেন মন্ত্রী।
নাস্তা শেষ করে সাধারণ এ হোটেল থেকে বের হলেই মন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করতে ছুটে এসেছেন অনেকেই। তাদেরও নিরাশ করেননি তিনি। তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেছেন।
সড়ক ও সেতুমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বের শুরু থেকেই জনগণের পছন্দের স্টাইলে কাজ করেন ওবায়দুল কাদের। সব সময় বুঝার চেষ্টা করেন মানুষের মনের ভাষা ও চোখের ভাষা।
তৃণমূল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে নিরন্তর সংগ্রামের পথ হেঁটে, জেল-জুলুম সয়ে এখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তিনি।
ক্লান্তিহীন পরিশ্রমই তাকে সফল মন্ত্রীর পাশাপাশি দলীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও সফলতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল পাঠান সেতু।
‘যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন ওবায়দুল কাদের। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন। কাজের মাধ্যমেই তিনি মানুষের আস্থা ও হৃদয় জয় করেছেন।
তৃণমূলে ভোটারদের সঙ্গে সেতুবন্ধন রচনায় তার পদক্ষেপ যুগান্তকারী, বলছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের আহবায়ক মোহাম্মদ শাহীনুর রহমান।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেওযার পর পরই ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, নেতাদের খুশি না করে ভোটারদের কাছে যান। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সমর্থন আদায় করেন।
শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর সকালে ফেনীতে ওবায়দুল কাদেরের এমন দিনলিপি তার বক্তব্যের প্রতিফলন বলেও মনে করছেন অনেকেই।
এমবি কানিজ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আমাদের কর্মীবান্ধব নেতা কর্মীদের প্রাণের সঙ্গে মিশে একাকার। কোথায় বিত্ত কোথায় জীর্ণ চিত্তের কাছে সব বলিয়ান।
এমন চিত্তের অধিকারী একজন মহান নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭
এমএএএম/বিএস