সেখানে সবই আগের মতো আছে, শুধু নেই শুধু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
বাসার মূল দরজা দিয়ে ঢুকে কিছুটা এগুতেই ডানে খাবার ঘর।
সামনেই রয়েছে হেড অফ দ্য ফ্যামিলির চেয়ার। এই চেয়ারে বসেই খাবারের সময় পরিবারের কিংবা দেশের জন্যও নানা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
আজ যেন শূন্যতায় হাহাকার করছে খাবার টেবিলের সেই চেয়ারটি।
সুরঞ্জিত সেনের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তের ছোট বোন কল্যাণী ভদ্র বাংলানিউজকে বলেন, দাদা সব সময় সমাজ নিয়ে ভাবতেন, দেশ নিয়ে ভাবতেন। কাজের বাইরে তিনি কিছুই বুঝতেন না। সাধারণত খাবার টেবিলে বসেই পরিবারের সব বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করতেন।
কাঠের চেয়ারটির দিকে ইঙ্গিত করে কল্যাণী বাংলানিউজকে বলেন, এই চেয়ারেই দাদা বসতেন। কারণ এই চেয়ারটি থেকে পাশের ও সামনের পাঁচ চেয়ারের সদস্যদের দেখা যেত। সাধারণ সুযোগ পেলেই দিদি (জয়া সেনগুপ্ত), একমাত্র ছেলে, কন্যা সমতুল্য ছেলের বৌ ও নাতিকে নিয়ে এক সাথে বসে খাবার খেতেন।
১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে জন্ম নেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট আটবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এই প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী হন সুরঞ্জিত। পরবর্তীতে তাকে দফতরবিহীন মন্ত্রী করা হয়।
সুরঞ্জিত সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাশের পর আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি।
সুরঞ্জিত সেন বর্তমান সংসদের আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য ছিলেন তিনি।
রোববার (০৫ জানুয়ারি) ভোর ৪টা ২৪ মিনিটে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান।
বাংলাদেশ সময় ১৫০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৭
ইউএম/এমএমকে