মঙ্গলবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের একটা রূপরেখা দেন বিএনপি জোটের সাবেক এই শীর্ষ নেতা।
শেখ শওকত হোসেন নীলু বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের ৬ শরিক এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ৭ শরিক দলের কাছ থেকে ৫টি করে নাম নিয়েছে সার্চ কমিটি।
এই নামগুলোর ভেতর থেকেই ৫ জনকে বেছে নিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-উভয় জোটের প্রস্তাব করা নাম-ই স্থান পেয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, এই দুই জোট আগামী নির্বাচন নিয়ে একটা সমঝোতায় পৌঁছেছে,-বলেন নিলু।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে গোপন আঁতাত হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই আঁতাতের শর্ত হলো-খালেদা জিয়াকে ছাড়াই নির্বাচনে যেতে হবে বিএনপিকে। আর এ ষড়যন্ত্রগুলো বিএনপির ভেতর থেকেই হচ্ছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের সমালোচনা করে এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জোটে থাকা অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ এবং তাদের দেওয়া প্রস্তাব করা ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। অথচ ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের প্রধান দল এনপিপিসহ অন্তত তিনটি নিবন্ধিত দলকে সংলাপে ডাকা হয়নি।
আগামীতে হয়তো দেখা যাবে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগ হবে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে নাম নিয়ে। অন্য বিচারপতি নিয়োগ হবে বিএনপির কাছ থেকে নাম নিয়ে। অর্থাৎ সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সমঝোতা হবে, বলেন নিলু।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নাম নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের নজীর পৃথিবীর আর কোনো দেশে দেখাতে পারলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।
নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা:
অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের একটা রূপরেখাও দিয়েছেন শেখ শওকত হোসেন নিলু। সংবাদ সম্মেলনে তার পক্ষে এ রূপরেখা তুলে ধরেন এনডিএফ’র শরিক ন্যাশনাল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শেখ শহিদুজ্জামান।
শেখ শওকত হোসেন নিলুর নির্বাচনকালীন সরকারের রূপরেখা’র মধ্যে রয়েছে- ১)দশম জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা-ই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন, ২) আগামী নির্বাচনে যে দল কমপক্ষে ৭৫ আসনে নির্বাচন করবেন সে দল থেকে একজন, যে দল কমপক্ষে ১৫১ আসনে নির্বাচন করবেন সে দল থেকে দুইজনকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী বানাতে হবে, ৩) নির্বাচনের সময় স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কোনো রজানৈতিক দলের কাছে থাকতে পারবে না, ৪) জোটভুক্ত কোনো দলের নেতা অন্য দলের প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রীসভায় তিনি থাকতে পারবেন না এবং ৫) রাষ্ট্রীয় সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাচনের মাঠে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জনগণের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তাবোধ তৈরি করে। তাই এ বাহিনীকে নির্বাচনের মাঠে নামানো যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- তৃণমূল ন্যাপের চেয়ারম্যান পারভীন নাসের ভাসানী, স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মজলিস, জাগপার চেয়ারম্যান একেএম মহিউদ্দিন বাবুল, ন্যাপ ভাসানীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সিকদার, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির মজুমদার, মুসলীম লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৭
এজেড/পিসি