এমন মানসিকতার কারণেই বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার টেবিলে এখন ফাইলের স্তুপ। কমপক্ষে ৮টি কমিটিও ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
সর্বশেষ কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুসারে মন্ত্রণালয় ভিত্তিক উপ-কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া। এ কমিটিতে অন্তত তিন শ’ নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চান তিনি।
দলীয় সূত্রমতে, এ তিনশ’ পদের জন্য অন্তত হাজার তিনেক পদপ্রত্যাশীর জীবন বৃত্তান্ত জমা পড়েছে বিএনপি প্রধানের টেবিলে। বিভিন্ন মাধ্যমে আসা এসব জীবন বৃত্তান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে উপ-কমিটি গঠন করতে চান তিনি। যেহেতু এক হাতেই সব করতে চান, সেহেতু গত এক বছর ধরে খালেদার টেবিলেই পড়ে আছে সেগুলোও।
২০১৪ সালের জুলাই মাসে অবিভক্ত ঢাকা মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপির চেয়ারপারসন। মির্জা আব্বাস ও হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দুই ভাগে বিভক্ত করে ঢাকা মহানগরীর আলাদা দু’টি কমিটি গঠনের তাড়া ছিলো খালেদা জিয়ার।
সূত্রমতে, ঢাকা মহানগরে দু’টি কমিটির জন্য খালেদা জিয়ার টেবিলে জমেছিলো ফাইলের স্তুপ। সম্ভাব্য নেতাদের নামের তালিকা, আগ্রহীদের জীবন বৃত্তান্ত, তাদের বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মূল্যায়নপত্রের ফাইলে চেয়ারপারসনের দফতর ছিলো ঠাসা। তাই কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) গভীর রাতে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন খালেদা জিয়া।
এদিকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, দু’জন সহ সভাপতি ও একজন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- এ পাঁচ পদে পাঁচজনকে নির্বাচিত করে মাস ছয়েক আগে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ‘সুপার ফাইভ’ কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
কমিটি ঘোষণার পর খুব দ্রুতই আফরোজা আব্বাস ও সুলতানা আহমেদের এ কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির প্রস্তাবনা জমা দেয় খালেদা জিয়ার কাছে। মাস তিনেক আগে জমা দেওয়া এ কমিটি এখন যাচাই-বাছাই করে দেখছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। যেকোনো সময় মহিলা দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও ঘোষণা দিতে পারেন তিনি।
সূত্র মতে, জাতীয়তাবাদী যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিও এখন খালেদা জিয়ার টেবিলে। সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর নেতৃত্বাধীন যুবদলের ‘সুপার ফাইভ’ কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপ দিতে এরই মধ্যে হাজার হাজার জীবন বৃত্তান্ত জমা পড়েছে খালেদা জিয়ার টেবিলে।
যথারীতি এ জীবন বৃত্তান্তগুলোও যাচাই-বাছাই করে দেখছেন তিনি। অচিরেই হয়তো যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে টেবিলের ফাইলের স্তুপ কমাবেন খালেদা জিয়া। এরপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ধরবেন অন্য কমিটিগুলোর কাজ।
অন্যদিকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিব হওয়ার পর ছেড়ে দিয়েছেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদুকে করা হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। সঙ্গত কারণেই মেয়াদোত্তীর্ণ কৃষক দলের নতুন কমিটি গঠনও এখন সময়ের ব্যাপার।
সূত্র মতে, কৃষক দলের খসড়া কমিটিও রয়েছে বিএনপির চেয়ারপারসনের হাতে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অন্য পদগুলোতে নেতা নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় ঘঁষা-মাজা শেষে যেকোনো সময় এ কমিটিও ঘোষণা করতে পারেন তিনি।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলানিউজকে বলেন, এখন তো সংগঠন গোছানোর কাজ চলছে। মঙ্গলবারই একটি কমিটি ছাড়া হলো। জমে থাকা কাজগুলো অচিরেই সেরে ফেলা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এজেড/এএসআর