খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বলেন, অতীতে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিলো। এজন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ফের ক্ষমতায় গেলে সেই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হবে না এ নিশ্চয়তা আগে দেওয়া উচিত ছিলো।
আওয়ামী লীগের নেতাদের কেউ কেউ বলেন, খালেদা জিয়া ভিশন-২০৩০ দিয়ে যেসব কথা বলেছেন এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। শুধু অন্যের দোষারোপ করে গেছেন। কিভাবে সামনে এগোবেন সে সম্পর্কে কিছু বলেননি। সামনে এগিয়ে যাওয়ার বাধা, যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গিবাদ, জামায়াত-শিবির সম্পর্কেও কোনো বক্তব্য নেই।
আবার কেউ কেউ বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকার সময় দুর্নীতি, লুটপাট, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। এর জন্য তাকে জনগণের কাছে ক্ষমা আগে চাওয়া উচিত। জাতির কাছে দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে অন্যের দোষারোপ করে গেছেন বলেও আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ।
আবার ভিশন-২০৩০ এর কোনো কোনো বিষয়কে বিপদজনক বলেও কেউ কেউ মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়া যেসব কথা বলেছেন তার অধিকাংশই দোষারোপে ভরা। সামনে এগিয়ে যাওয়ার তো কোনো কথা বলেননি। কি পথে এগোবেন সেটাও বলেননি। আসলে যাদের এগোবার পথ ষড়যন্ত্রের রাজনীতি তারা রূপরেখা কি দেবে।
যুদ্ধাপরাধ, জঙ্গিবাদ, জামায়াত-শিবির নিয়ে কি করবেন বক্তব্যে সেটাও বলেননি। শুধু দায়বদ্ধতা থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে অন্যকে দোষারোপ করে গেছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়া সংসদের কাছে দায়বদ্ধতার কথা বলেছেন, আসলে আমাদের সংবিধানেই বলা আছে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে জাতীয় সংসদ। সবাই সংসদের কাছে দায়বদ্ধ। এখন নতুন করে আর এটা বলার তো দরকার নেই। দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদের কথা চিন্তা করবেন বলেছেন। কিন্তু ওনার তো বয়স হয়ে গেছে, কবে চিন্তা করবেন? কি করতে চান সেটা এখনই বলতে পারতেন।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ওই সময় গণতন্ত্র ছিলো বিপন্ন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে মানুষের মধ্যে একটা আতঙ্ক তৈরি করেছিলেন। দুর্নীতি, লুটপাট, ছেলেদের অর্থপাচার সব মিলিয়ে দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। খালেদা জিয়ার এখন উচিত এসবের জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া। ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গেলে এসব করবেন না এর নিশ্চয়তা আগে দেওয়া উচিত।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার বক্তব্যে নতুন কিছু নেই। বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি বলেছেন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করবেন। আসলে তিনি যখন থেকে রাজনীতি শুরু করেছেন তখন থেকেই এ কথা বলে আসছেন। তিনি ক্ষমতায় গিয়ে এ আইনের অপব্যহার করেছেন। এটাই প্রমাণ হয় তিনি জাতির সঙ্গে আবারও প্রতারণা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা তিনি কার সঙ্গে ভারসাম্য করবেন। তিনি ক্ষমতায় থাকার সময় হাওয়া ভবন ছিলো সরকারের মধ্যে সরকার। তাহলে কি আবার সেটা করবেন?
বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৭
এসকে/জেডএস