ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

‘মিঠু হত্যায় প্রবাসী নেতার অর্থায়নের অভিযোগ মিথ্যা’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৭ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৭
‘মিঠু হত্যায় প্রবাসী নেতার অর্থায়নের অভিযোগ মিথ্যা’ প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

খুলনা: খুলনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলাউদ্দিন মিঠু হত্যাকাণ্ডে এক প্রবাসী বিএনপি নেতা অর্থায়ন করেছেন বলে পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।

কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও  খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু বুধবার (৩১ মে) দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, মিঠুর প্রকৃত হত্যাকারী, পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতাদের আড়াল করতে বিএনপির মরদেহ বিএনপির ঘাড়ে তুলে দিতে চেয়েছে পুলিশ।

তিনি বলেন, মিঠুর বাবা সরদার আবুল কাশেম, বড় ভাই আবু সাঈদ বাদল এবং সর্বশেষ মিঠুর হত্যাকারীরা একই গোষ্ঠী।

মিঠুকে একাধিকবার হত্যার উদ্দেশ্যে তারাই হামলা চালিয়েছিল। তিনটি ঘটনাই ঘটেছে আওয়ামী লীগ শাসনামলে।

এই দলটি ক্ষমতায় থাকলে খুনিরা বেপরোয়া, নৃশংস ও বীভৎস হয়ে ওঠে। মিঠুর হত্যাকারীরাও শাসক দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে আছেন বলেও অভিযোগ করেন নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
 
সরদার আলাউদ্দিন মিঠু ও তার দেহরক্ষী নওশের গাজী হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজির মঙ্গলবারের (৩০ মে) প্রেস ব্রিফিংয়ের জবাবে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে বিএনপি।

মঞ্জু বলেন, ‘ভয়াবহ ও নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে পুলিশের খুলনা বিভাগীয় প্রধানের বক্তব্যে রহস্য উদ্‌ঘাটিত হবে বলে আমরা আশা করেছিলাম। কিন্তু সেখানে মিঠুর হত্যাকারীদের আড়াল করে সম্পূর্ণ দায়ভার বিএনপির ওপর চাপানো হয়েছে। মিঠুর পরিবারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে এ বক্তব্য নাকচ করা হয়েছে’।

বিএনপি নেতা হাসনাত রিজভী মার্শালের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রসঙ্গে মঞ্জু বলেন, ‘তাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গ্রেফতারের পর তিনদিন কোনো সন্ধান মেলেনি। এরপর অজ্ঞাত স্থান থেকে বেদম মারপিটে গুরুতর জখম অবস্থায় নিয়ে এসে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেখানোতে আমরা হতবাক। পত্রিকার মাধ্যমে জানলাম, ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে মার্শালের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। সে জবানবন্দিতে প্রকৃত অর্থে কি বলা আছে, তা আমরা জানি না। একই সময়ে কিরণ নামে এক ছাত্রদল কর্মী গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনি পুলিশের কাছে আছেন। তার কথা এখনও স্বীকার করেনি পুলিশ’।

ডিআইজির প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রদর্শিত পাইপগান সদৃশ্য অস্ত্রটি এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ‘খুনিরা যেভাবে গুলি করেছে তা অত্যন্ত অত্যাধুনিক অস্ত্রের। উদ্ধারকৃত এ অস্ত্রের ব্যালেস্টিক পরীক্ষা ছাড়াই পুলিশ বলে দিলো, এটি হত্যায় ব্যবহৃত হয়েছে। এমনকি যে তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তারাও এই হত্যায় জড়িত নয় বলে আমরা মনে করি। মিঠুর পরিবারও পুলিশের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে’।

‘উপজেলা নির্বাচন নিয়ে সরকার দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে মিঠুর বিরোধ ছিল। যিনি এখন ওই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। সেখানকার এক ইউপি চেয়ারম্যান, যার ভাই চরমপন্থী দলের নেতা। তারা সবাই এখন শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত। তাদের সঙ্গে সরদার পরিবারের বিরোধ ছিল। কিন্তু পুলিশ এসব বিষয়ে তদন্ত করছে না’।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফুলতলার জামিরা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ড. মামুন রহমান প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘তিনি লন্ডন প্রবাসী একজন ভদ্র সজ্জন মানুষ। তিনি উচ্চশিক্ষিত একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি মিঠুকে হত্যার জন্য ৩০ লাখ টাকা দিয়েছেন- এটি অবিশ্বাস্য ও যুক্তিযুক্ত নয়। পুলিশ খুনিদের রক্ষা করতে আষাঢ়ে গল্প ফেঁদেছে। মামুনও মিডিয়াকে বলেছেন, দেশে তার কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে এতো টাকা লেনদেন হয়েছে, পুলিশ প্রমাণ করতে পারলে তিনি দেশে এসে আত্মসমর্পণ করবেন’।

‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা মামুন রহমানের বিষয়ে পুলিশের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করছি’।

মহানগর কার্যালয়ে এ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা এবং খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি।
 
বাংলাদেশ সময়:  ১৭০৫ ঘণ্টা,  মে ৩১, ২০১৭
এমআরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।