দলের সভাপতিমণ্ডলীর সভায় সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মুহিতুর রহমান শান্তর প্রার্থিতার বিষয়েও কথা হয়।
ইকরামুল হক টিটু বিষয়টিকে দেখছেন গত ৬ বছরে মেয়র হিসেবে পৌরবাসীকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার যে চেষ্টা করেছেন, তার ফল হিসেবে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়টি আমিও অনানুষ্ঠানিকভাবে শুনেছি বা জেনেছি। অনেক সিনিয়র নেতাই আমাকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে বলেছেন। আমি মানুষকে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। হয়তো সফল হইনি সবক্ষেত্রে। তবে চেষ্টার কমতি ছিলো না। দলের জন্যও সাধ্যমতো করার চেষ্টা করেছি। নিশ্চয়ই দলের সর্বোচ্চ ফোরামের এসব ভালো লেগেছে, পছন্দ হয়েছে।
দলে কারো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে টিটু বলেন, ‘অনেকেই হয়তো আলোচনায় থাকতে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। কিন্তু সবকিছুর চূড়ান্ত নেত্রী করে দিয়েছেন। তাই সবাই দলের জন্য কাজ করবেন বলে আমার বিশ্বাস’।
তবে অন্য চ্যালেঞ্জ আছে টিটুর জন্য। নতুন সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত নতুন এলাকাগুলোতে জমি রক্ষার আন্দোলন হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে। এটি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘যারা সরকার ও উন্নয়নবিরোধী, তারাই আন্দোলন করছেন। গত ৬ বছরে আমি যে উন্নয়ন করেছি, মানুষের পাশে যেভাবে থাকার চেষ্টা করেছি, আশা করি, শেষ পর্যন্ত তাতেই পরিস্থিতি পাল্টে যাবে’।
‘নতুন শহর তৈরি করে সেখানে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি করে দেওয়া হবে। বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসাকেন্দ্র থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এসব ঘোষণা দিয়েছেন। ৬০/৭০ শতাংশ মানুষই তা বোঝেন। কিন্তু এটিকে নিয়ে যারা রাজনীতি করতে চান, কেবল তারাই পুঁজি করছেন’।
পড়ুন: খুলনা সিটিতে মনোনয়ন পাচ্ছেন শেখ জুয়েল!
ব্রিটিশ কোম্পানির শাসনামলে ১৭৮৭ সালের ০১ মে গঠিত হয় ময়মনসিংহ জেলা। ১৮৬৯ সালে ২১ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে হয় ময়মনসিংহ পৌরসভা। এরপর দুই দফায় বেড়েছে পৌরসভার আয়তন। আকুয়া ও বয়রা ইউনিয়ন, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারের শম্ভুগঞ্জ এবং পুরনো পৌর এলাকা নিয়ে বর্তমানে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করার কাজ চলছে। সিটি করপোরেশন হবে, তাই এবার পৌরসভার নির্বাচন হয়নি। যেসব ইউনিয়ন সিটি করপোরেশনের আওতায় আসবে, সেগুলোতেও নির্বাচন হচ্ছে না।
এসব কারণে সিটি নির্বাচনের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই। তাই বিভিন্ন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নেমে পড়েছেন নির্বাচনী প্রচারে।
আরও পড়ুন: বরিশাল সিটিতে আ’লীগের পছন্দ খোকন সেরনিয়াবাত
আওয়ামী লীগে অন্তত পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর কথা শোনা গেলেও আলোচনা মূলত বর্তমান মেয়র টিটু ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের ছেলে মুহিতুর রহমান শান্তকে ঘিরেই সীমাবদ্ধ ছিলো।
সর্বশেষ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে মেয়র হন টিটু। এর আগে তিন বছর ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তবে এবারের নির্বাচনে টিটুর পরিবর্তে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্ত।
গত পৌর নির্বাচনের পর থেকেই ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানের পক্ষে রয়েছেন একটি অংশ। তার বিরোধী অংশ মেয়র টিটুর নেতৃত্বে আরেকটি ধারা গড়ে তুলেছেন। কয়েক বছর ধরে এ দুই অংশ সবকিছুতেই মুখোমুখি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
আরএম/এএসআর