যদিও তার ফ্লাইট সিডিউল ছিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায়। কিন্ত প্রচণ্ড যানজটের কারণে খালেদা জিয়া নির্দিষ্ট সময়ের আগে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেননি।
এদিকে দেরি করে বিমানবন্দরে পৌঁছানোয় সেখানে উপস্থিত বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করতে পারেননি খালেদা জিয়া। রেলিংয়ের ওপাশে দাঁড়ানো নেতারা হাত নেড়ে দলীয় প্রধানকে বিদায় শুভেচ্ছা জানান। দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ফুলের বুকেট উঁচু করে ধরে খালেদা জিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণের ‘বৃথা’ চেষ্টা করেন।
এদিকে খালেদা জিয়া বিমানবন্দরে পৌঁছানোর প্রায় ২ ঘণ্টা আগে ভিআইপি টার্মিনালে পৌঁছান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল কাইয়ুম। এ দুইজন খালেদা জিয়ার বোর্ডিং পাসসহ ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হয়েছেন তার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম। সফরসঙ্গী না হলেও লন্ডনের উদ্দেশে শুক্রবার ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা।
ব্রিটিশ আইনসভার একটি সেমিনারে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তাদের। পরে তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।
বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে যাওয়া নেতাদের মধ্যে ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, এম এ মান্নান, মীর মোহাম্মদ নাসির, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কবির মুরাদ, মিজানুর রহমান মিনু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসিচব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,খায়রুল কবির খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হারুন অর রশিদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাসার, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য নীলোফার চৌধুরী মনি, শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।
এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেসউইংয়ের দুই কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার লন্ডনযাত্রা উপলক্ষে দুপুরের পর থেকেই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা বিমানবন্দর এলাকায় আসতে থাকেন। কিন্তু আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী তাদের বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনাল সড়ক পার হতে দেননি।
ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা এসব নেতাকর্মী খালেদা ও তারেক রহমানের ছবি ও বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে হাজির হন। তাদের বিমানবন্দর এলাকায় ঢুকতে না দেওয়ায় সরকার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন নেতাকর্মীরা।
দলের স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত সফরে লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড তারেক রহমান অবস্থান করছেন।
সঙ্গত কারণেই সেখানেই রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা হবে। কিছু কিছু ব্যাপারে সিদ্ধান্তও আসতে পারে।
তিনি বলেন, চেয়ারপারসন দেশে ফিরেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন। এর পর সহায়ক সরকারের পক্ষে জনমত তৈরির জন্য গণসংযোগ কর্মসূচি শুরু করবে বিএনপি।
এভাবেই ধারাবাহিকভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের দাবি আদায়ের চেষ্টা করবো আমরা। পরিস্থিতি ও সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী কর্মসূচি।
এদিকে খালেদা জিয়া লন্ডনে কতদিন থাকবেন, সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বিএনপি। ধারণা করা হচ্ছে এবার প্রায় দুই মাস লন্ডনে অবস্থান করবেন খালেদা জিয়া। আগামী সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হবে। ছেলে,ছেলের বউ ও নাতনির সঙ্গে ঈদ কাটিয়ে আসার সম্ভবনা রয়েছে তার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
এজেড/এসএইচ/আরআই