প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তিন বিচারপতির বেঞ্চ রোববার (১৬ জুলাই) ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন।
ফলে মেয়র মান্নানের দায়িত্ব পালনে আর কোনো আইনগত বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
আদালতে মেয়র মান্নানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আবু হানিফ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আদেশের পরে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, সাময়িক বরখাস্তের বিরুদ্ধে রিটের পর হাইকোর্ট তা স্থগিত করেন। হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে আপিল বিভাগ আজ ‘নো অর্ডার’ আদেশ দেন। অর্থাৎ হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকলো। এখন তার দায়িত্ব পালনে আর কোনো আইনি বাধা নেই।
দুর্নীতি দমন কমিশনের এক মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) স্থানীয় সরকার বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এম এ মান্নানকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মান্নানের করা রিট আবেদনের শুনানি শেষে রোববার (০৯ জুলাই) বিকেলে তিনমাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
একইসঙ্গে বরখাস্তাদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেন। মান্নানকে দায়িত্ব পালনে যেন কোনো বাধা না দেওয়া হয়, সে আদেশ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে আসাদুর রহমান কিরণের নিয়োগও স্থগিত করেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের পর সোমবার (১০ জুলাই) চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন। ।
পরে রোববার (১৬ জুলাই) এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো নির্বোচনে গাজীপুর সিটি মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির এই নেতা। পরবর্তীতে নাশকতার এক মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার পর ২০১৫ সালের ১৯ আগস্ট অধ্যাপক মান্নানকে প্রথম বরখাস্ত করেছিল স্থানীয় সরকার বিভাগ।
এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ২৮ মাস পর মেয়র পদ ফিরে পান এম এ মান্নান। কিন্তু এরপর পরই আরও একটি মামলার অভিযোগপত্র গৃহীত হলে ২০১৬ সালের ১৮ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ওই আদেশেরও বিরুদ্ধেও আইনি লড়াই করেন মান্নান। গত ১৮ জুন পুনরায় পদ ফিরে পান তিনি। কিন্তু এর কয়েকদিনের মধ্যে দুর্নীতির মামলায় অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার পর ফের তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর বিভিন্ন মামলায় বিএনপির এ নেতাকে বেশিরভাগ সময় কারাগারেই কাটাতে হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
ইএস/এসএইচ