ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

হাওরের ইজারা বাতিলসহ ৭ দফা দাবিতে গণসংহতির মানববন্ধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
হাওরের ইজারা বাতিলসহ ৭ দফা দাবিতে গণসংহতির মানববন্ধন ৭ দফা দাবিতে গণসংহতির মানববন্ধন

কিশোরগঞ্জ: ভাসান পানিতে মাছ ধরার মুক্ত অধিকার, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য রেশনিং, ব্যাংক ঋণ ও এনজিও ঋণ বাতিল, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণসহ ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে গণসংহতি আন্দোলন কিশোরগঞ্জ, নিকলী উপজেলা শাখা।

বুধবার (১৯ জুলাই) সকাল দশটায় দেওয়ান আবদুর রশীদ নীলুর সভাপতিত্বে নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।  

মানববন্দন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

এছাড়া ওয়াজিবুল্লাহ, আজিজুর রহমান, মোজাম্মেল হকসহ স্থানীয় কৃষক নেতারাও বক্তব্য রাখেন।

জোনায়েদ সাকি তার বক্তব্যে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, ঠিকাদার ও অসৎ রাজনৈতিক নেতাদের লুণ্ঠন ও গাফিলতির ফল হলো হাওরে এই বিপর্যয়। কিন্তু হাওরবাসীর এত বড় ক্ষতি সাধিত হবার পরও সেখানকার জনগণের প্রধান দাবি হাওরের ইজারাপ্রথা বাতিল করে সকল হাওরবাসী জেলেকে মুক্তভাবে মাছ ধরার অধিকার প্রদান করে বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করার দাবিটি সরকার বাস্তবায়ন করছে না। হাওরবাসী বহু মানুষ তাই ধান হারিয়ে, মাছ ধরার অধিকার না পেয়ে সারা দেশে ছুটছেন জীবিকার সন্ধানে। তাদের সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জাতীয় একটা বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে হাওরে।  

অবিলম্বে হাওরবাসীর দুর্দশা লাঘবের জন্য হাওরে মাছ ধরার অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ গণসংহতি আন্দোলনের ৭ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি।
৭ দফা দাবিতে গণসংহতির মানববন্ধনঅন্যান্য বক্তরা বলেন, হাওরে ইজারা প্রথা মাছের স্বাভাবিক বিচরণ ও বংশবিস্তার বন্ধ করে দিচ্ছে। ইজারাদার বিশাল আকারের জাল দিয়ে ডিম আর পোনা মাছ সমেত সব কিছু তুলে নেওয়ার ফলে হাওরের স্বাভাবিক প্রকৃতি বিনষ্ট হয়েছে। পলির কারণেও হাওরের নদীগুলোর পানিধারণ ক্ষমতা ও পানি নিষ্কাশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের প্রতিকার না করা হলে সামনের দিনে হাওরে বিপর্যয় আরও বৃদ্ধি পেতে থাকবে।

সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে হাওরবাসীর ৭ দফা দাবি পাঠ করে শোনানো হয়। দাবিগুলো হলো: 
১. হাওরের জলমহাল বিশেষত ভাসান পানির ইজারা বাতিল করে সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের মাছ ধরার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।  
২. নিকলীসহ ক্ষতিগ্রস্ত হাওর অঞ্চলের কৃষকদের কৃষিঋণ ও এনজিও ঋণ মওকুফ করে নতুন সুদমুক্ত কৃষিঋণ প্রদান করতে হবে।  
৩. ক্ষতিগ্রস্ত ২৪ লাখ পরিবারের জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে খাদ্য ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কার্যক্রম চালু করতে হবে।  
৪. কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করতে হবে।  
৫. যাদের অবহেলায় বাঁধের মেরামত ও সংস্কারে বিলম্ব হয়েছে তাদের যথাযথ বিচার করতে হবে।  
৬. হাওরের প্রকৃতিবিরোধী উন্নয়ন বাতিল করে হাওরের প্রাণ-প্রকৃতি উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  
৭. হাওর অঞ্চলকে অকাল বন্যা ও পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষার জন্য নদী ও খাল ড্রেজিং করতে হবে।

মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসী কৃষকদের পক্ষে গণসংহতি আন্দোলন, নিকলী উপজেলা, কিশোরগঞ্জ শাখা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
পিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।