ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জাবিতে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনে বিভক্ত আ’লীগ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
জাবিতে রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনে বিভক্ত আ’লীগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সিনেটের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। দু’গ্রুপই নিজেদেরকে বঙ্গবন্ধুর আর্দশ ও মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বিশ্বাসী বলে দাবি করছেন। একই সঙ্গে তারা একে অন্যকে ‘আদর্শচ্যূত’ বলে অভিহিত করছেন।

এ দ্বন্দ্বে নির্বাচন আদৌ হবে কি-না?- তা নিয়ে শঙ্কিত রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটরা।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্যানেল গঠন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি ও জাকসুর সাবেক ভিপি মো. মোতাহার  হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে 'বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল জোট’ নামে একটি প্যানেল করা হয়েছে। অন্যদিকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন ও জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল আলমের নেতৃত্বে সাবেক ছাত্রলীগ পর্ষদ ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল গ্রাজুয়েট মঞ্চ’ নামে অন্য প্যানেলটি গঠন করেছে। তবে উভয় প্যানেলেই সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রফ্রন্টের নেতারা রয়েছেন।

এদিকে অধ্যাপক শামছুল আলম সেলিমের নেতৃত্বে বিএনপিপন্থি গ্রাজুয়েটরা ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছেন।

স্বতন্ত্র ৪৪ জনসহ মোট ১১৯ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা রহিমা কানিজ।

আওয়ামী লীগপন্থি রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েটদের সূত্রে জানা গেছে, দুই গ্রুপকে ঐক্যবদ্ধ করতে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাকসুর সাবেক ভিপি এ কে এম এনামুল হক শামীম উভয় গ্রুপের নেতাদের রাজধানীর ধানমণ্ডিতে ডেকে বৈঠক করেন।

বৈঠক ২৫টি আসনের মধ্যে উভয় গ্রুপকে ১২টি করে আসন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দুই গ্রুপের প্রার্থীদের নাম এনামুল হক শামীমের কাছে জমা দিতে বলা হয়। বাকি আসনটি শামীমের পছন্দের প্রার্থীকে দেওয়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু সাবেক ছাত্রলীগ পর্ষদ ১২ জন প্রার্থীর নাম শামীমের কাছে জমা দিলেও শরীফ এনামুল কবির তার গ্রুপের প্রার্থীদের নাম না দেওয়ায় সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পরে উভয় গ্রুপ আলাদাভাবে প্যানেল দাঁড় করায়।

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আবদুল্লাহ হেল কাফী বাংলানিউজকে বলেন, ‘১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিলের রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট নির্বাচনে শরীফ এনামুল কবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে বিএনপিপন্থি প্যানেল থেকে নির্বাচিত হন। যে ব্যক্তি বিএনপি–জামায়াতকে মদদ দেন, তার পক্ষ নিয়ে নির্বাচন করা আমাদের আদর্শের সঙ্গে সংঘাত ছাড়া আর কি হতে পারে? নিজের স্বার্থ আদায়ে তিনি বিএনপি ও জামায়াতকে আওয়ামী লীগ বানান’।

‘আর সবচেয়ে থেকে বড় কথা, মূল দলের নেতার কথা উপেক্ষা করে ওয়াদা খেলাপকারী হিসেবে তিনি (শরীফ এনামুল কবির) নিজেকে পরিচিত করেছেন’।

সাবেক ছাত্রলীগ পর্ষদের আহ্বায়ক শফিকুল আলম বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তবে একটি কুচক্রি মহল নির্বাচন বানচাল করতে চাচ্ছে। আমরা স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি’।

‘কোন পক্ষ বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযোদ্ধার চেতনায় বিশ্বাসী’- এমন প্রশ্নে সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. আমির হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে হবে’।

‘অন্যপক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ১৯৯৮ সালের নির্বাচনে আপনি বিএনপিপন্থি প্যানেল থেকে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলেন’- জবাবে তিনি বলেন, ‘সেই সময় প্রশাসনের বিপক্ষে বাম, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলে একটি প্যানেল করে নির্বাচন করেছিল। বিষয়টি সবাই জানেন’।

এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক মো. আমির হোসেনের মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক বলেন, ‘আমরা আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে’।

‘আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ মনে করছেন, নির্বাচন বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে’- এমন প্রশ্নের উত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো আভাস পাইনি। সবার মতো আমিও চাই, নির্বাচন হোক’।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৭
এএসআর
**
জাবি সিনেট নির্বাচনে ক্যাম্পাসেই ভোটকেন্দ্র

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।