ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

উচ্চ আদালতে খালেদার আপিলে যতো প্রক্রিয়া

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮
উচ্চ আদালতে খালেদার আপিলে যতো প্রক্রিয়া নিজের গাড়িতে রায় শুনতে আদালতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া/ছবি: জিএম মুজিবুর। ফাইল ছবি।

ঢাকা: দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবান্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল ও জামিন আবেদনের জন্য একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ রোববারের (১১ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে আপিলের কথা বললেও অন্য আইনজীবীরা বলছেন, বিচারিক আদালতের রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়া সাপেক্ষেই কেবল উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।

আইনজীবীদের মতে, আপিল দাখিলের পর আপিলের গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য দিন ঠিক করতে দুই/একদিন লাগতে পারে। দিনক্ষণ ঠিকের পর হাইকোর্টে পক্ষ বিপক্ষের শুনানি হবে।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে যদি জামিন দেন তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে যেতে পারে।

আবার যদি জামিন মঞ্জুর না করেন তাহলে খালেদা জিয়া নিজেই চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করবেন। একইভাবে চেম্বার জজ আদালতে কোনো পক্ষ যদি মনপুত আদেশ না পান তাহলে তারা আবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চেও আবেদন করতে পারেন। আর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চেই যে কোনো মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন কারা অধিদপ্তরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

ওইদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, রায়ের কপি পেলে আপিল করবো এ রায়ের বিরুদ্ধে। রোববারই আপিল করবো। আশা করি, আপিলে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।  

এর আগে রায় ঘোষণার পর আদালত থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ম্যাডাম আপিল করতে বলেছেন। সার্টিফায়েড কপি পাওয়ার পর আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

শুক্রবার এ বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী, বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টবারের সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রায়ের আগেই আমরা সত্যায়িত অনুলিপি চেয়েছি। বিচারিক আদালতে বলেছি, যে রায়ই দেন আমাদের অনুলিপি প্রয়োজন। আশা করবো, দ্রুতই অনুলিপি পাবো। অনুলিপি পাওয়ার পর হাইকোর্টে আপিল করবো। এটা হাইকোর্টের একক বেঞ্চে করতে হবে। আশা করি, আপিল দাখিলের পর গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানির জন্য দুই/একদিনের মধ্যে দিনক্ষণ ঠিক হতে পারে।  
 
দিন ঠিক হওয়ার পর শুনানি হবে। আপিলের সময় জামিনও চাইবো। এটা সংক্ষিপ্ত সাজা। আশা করি, আদালত জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করবেন। তবে, আমরা এখন দণ্ড স্থগিত চাইবো না। শুধু আপিল। আর আপিলের সঙ্গে জামিন আবেদন, যোগ করেন তিনি।
 
কবে নাগাদ আপিল করবেন এমন প্রশ্নে খন্দকার মাহবুব বলেন, অনুলিপির জন্য আবেদন তো করেছি। আশা করি, দ্রুতই পেয়ে যাবো। দেরি হবে না।  
 
উচ্চ আদালতে দুদকের একজন কৌসুলি আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, যদি আসামিপক্ষ মনে করেন আপিল করবেন, তাহলে সত্যায়িত অনুলিপি পাওয়ার পর আপিল করতে পারবেন। আর যেহেতু এটা দুদকের মামলা, তাই দুদক তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেই। হাইকোর্ট বিভাগ, আপিল বিভাগ সবখানেই। অন্যান্য মামলার মতো।

বছর খানেক আগে দুদকের মামলায় সরকার দলীয় এক সংসদ সদস্যের তিন বছরের সাজা হয়েছিল। সম্পদের তথ্য গোপনের দায়ে ২০১৬ সালের ০২ নভেম্বর তাকে এ সাজা দেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালত। এর বিরুদ্ধে ওই বছরের ১০ নভেম্বর আপিল করার কথা জানিয়েছিলেন তার আইনজীবী। ১৬ নভেম্বর হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ তাকে ছয় মাসের জামিন দেন। এরপর দুদক এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। যদিও আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০ নভেম্বর নো অর্ডার আদেশ দিয়েছিলেন। অর্থাৎ হাইকোর্টের আদেশ বহাল।

খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে এ মামলাটিকে উদাহরণ হিসেবে ধরা হবে কি না জানতে চাইলে কোনো আইনজীবীই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৮
ইএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।