ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

খালেদার মুক্তির আন্দোলনে ৫ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫০ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
খালেদার মুক্তির আন্দোলনে ৫ হাজার নেতাকর্মী গ্রেফতার খুলনা বিভাগীয় জনসভায় মির্জা ফখরুল/ছবি: মানজারুল ইমলাম

খুলনা: দীর্ঘ এক মাস ধরে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তারপরও তার মনোবল হারায়নি। তিনি স্বৈরাচারকে বিদায় দিতে সব রাজনৈতিক শক্তির ঐক্যের জন্য কারাগার থেকে আহ্বান জানিয়েছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির আন্দোলনে সারাদেশে এ পর্যন্ত ৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শনিবার (১০ মার্চ) বিকেলে মহানগরীর বিএনপি কার্যালয়ের খুলনা বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায়ের কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ বিভাগীয় জনসভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হাজার হাজার নেতা-কর্মী স্বেচ্ছায় কারাবরণ করতে প্রস্তুতের প্রতিশ্রুতি এ আন্দোলনের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।

রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে রাজনৈতিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস বন্ধ করতে দেশ প্রেমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে নির্দলীয় সরকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, একটি মিথ্যা মামলায় পরিকল্পিত রায় দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করা হয়েছে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য, তিনি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন এবং ভোট চুরি করে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে আবারো সুগম করা।

বিএনপি মহাসচিব পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের প্রতিপক্ষ হওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলনের পথে বাধা না হতে পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

খুলনা-যশোর রোডের দুর্দশার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সড়ক ও পরিবহনমন্ত্রী মিডিয়ার সামনে উন্নয়নের জোয়ার এবং দিনকে রাত, রাতকে দিন বানান। ফখরুল দুঃখের সঙ্গে বলেন, যশোর রোডের দুর্ভোগ এড়াতে নড়াইল সড়ক দিয়ে খুলনায় এসে পৌঁছেছি।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও খুলনা মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। অতিথি ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধূরী, সহ-সভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য সৈয়দ মেহেদী রুমি, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুজিবর রহমান সরোয়ার, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক সোহরাব হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা মাসুদ অরুন, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, অমলেন্দু দাস, কবির মুরাদ ও ড. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।  

বিভাগীয় বক্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা বিএনপি সভাপতি অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, খুলনা সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি, বাগেরহাট জেলা সভাপতি আব্দুস সালাম, নড়াইল জেলা সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, চুয়াডাঙ্গা সভাপতি অহেদুল ইসলাম বিশ্বাস, সাতক্ষীরা জেলা সাধারণ সম্পাদক তারিকুল হাসান, যশোর জেলা সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাবেরুল ইসলাম সাবু।

২০দলীয় জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর বিজেপি সভাপতি অ্যাডভোকেট লতিফুর রহমান লাবু ও নগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফকরুল আলম ও প্রচার সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল হাসান বাপ্পি, স্বেচ্ছাসেবক দলের খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আজিজুল হাসান দুলু।

এর আগে শহীদ হাদিস পার্কে একই দিন ও সময়ে বিএনপি এবং মহিলা আওয়ামী লীগ জনসভা আহ্বান করায় উদ্ভুত পরিস্থিতি এড়াতে শুক্রবার শহীদ হাদিস পার্ক ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় জনসভার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শহীদ হাদিস পার্ক ও আশেপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা,  মার্চ ১০, ২০১৮
এমআরএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।