ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে চলেছেন যারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে চলেছেন যারা বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত শীর্ষ কয়েকজন নেতা

ঢাকা: জোটের জন্য ৬০ আসন ছাড়লেও ৩শ আসনে বিকল্প প্রার্থী রেখে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যেই চিঠি দেওয়াও শুরু করেছে দলটি। তবে সোমবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলীয় প্রার্থীদের চিঠি দেওয়া হবে। চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন কিংবা পেতে চলেছেন এমন একটি তালিকা নির্ভরযোগ্য সূত্রে পেয়েছে বাংলানিউজ।

দলীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বগুড়া-৬ ও ৭ এবং ফেনী-১ আসনে প্রার্থী হবেন। ১৯৯১ সাল থেকে কখনও তিনি হারেননি এসব আসনে।

তবে এবার সাজার কারণে শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে না আসতে পারলে বিকল্পও রাখা হয়েছে।  

বগুড়া-৬ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প হিসেবে আছেন সদর পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম, বর্তমান সভাপতি ভিপি সাইফুল ইসলাম ও জেলার সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন। বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি নেত্রীর বিকল্প হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান মোর্শেদ মিল্টনের নাম রাখা হয়েছে। এভাবে সারা দেশে ৩শ আসনেই বিকল্প প্রার্থী রেখে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে বিএনপি।

ঠাকুরগাঁও-১ আসনে বরাবরের মতো এবারও নির্বাচন করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দিনাজপুর-২ আসনে নির্বাচন করবেন মির্জা ফখরুলের ভগ্নীপতি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান।

সিলেট-২ আসনে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার এবার প্রার্থী হচ্ছেন না। তার ছেলে দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর-১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী মনোনয়ন পাচ্ছেন। জিয়াউর রহমানের সময় থেকে দল করা বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সাবেক সদস্যকে দীর্ঘদিন পর গত মাসে তাকে দলে ফেরানো হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ও কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমের মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে বলে জানা যায়।

যশোর-৩ আসনে স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম মারা যাওয়ায় তার ছেলে দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত মনোনয়ন পাচ্ছেন। বরিশাল-১ আসনে ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সোবহানের পরিবর্তে সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন মনোনয়ন পেয়েছেন।

নরসিংদী-২ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নরসিংদী-১ আসনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, নরসিংদী-৩ আসনে বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, নরসিংদী-৪ আসনে সাবেক এমপি সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে খবর রয়েছে।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত, মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, মুন্সীগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান সিনহা, মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাইয়ের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে।

ফরিদপুর-১ আসনে শ্রমিক নেতা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, ফরিদপুর-২ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ মনোনয়ন পেয়েছেন। রাজবাড়ী-১ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম।

খুলনা-২ আসনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা-৪ আসনে শাহ শরিফ কামাল তাজের পরিবর্তে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলাল মনোনয়ন পাচ্ছেন। হেলাল ২০০৮ সালে ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচন করেছিলেন।

কুমিল্লা-১ আসনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, কুমিল্লা-৫ আসনে ভাইস-চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ মনোনয়ন পেয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।

ফেনী-১ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিকল্প হিসেবে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুকে রাখা হয়েছে। ফেনী-২ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবদীন ভিপির নাম রয়েছে। ফেনী-৩ আসনে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জনির নাম রয়েছে। তবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে না পারলে ফেনীর হিসাব পাল্টে যাবে। তখন ফেনী-৩ আসনে মনোনয়ন পাবেন ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

নোয়াখালী-১ আসনে যুগ্ম-মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিরোধীদলীয় সাবেকচিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক, নোয়াখালী-৩ আসনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, নোয়াখালী-৪ আসনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, নোয়াখালী-৫ আসনেস্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দলীয় মনোনয়নের চিঠি নিয়েছেন বলে জানা যায়।

লক্ষীপুর-২ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, লক্ষীপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, চাঁদপুর-১ আসনে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আ ন ম এহছানুল হক মিলনের নাম চূড়ান্ত তালিকায় রয়েছে।

এদিকে রোববার রাতে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ভোলা-৩ ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনয়নের চিঠি পেয়েছেন ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো।

এছাড়া কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, চাপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, কক্সবাজারসহ দূরবর্তী জেলার মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ১০০ মনোনয়ন চিঠি বিতরণ করা হয়েছে বলে দলের একটি সূত্র বাংলানিউজকে জানিয়েছে।

সবকিছু ঠিক থাকলে দলের সব প্রার্থীকে সোমবার বিকাল ৩টার পর থেকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষর করা চিঠি দেওয়া হবে।  

দলীয় সূত্র জানায়, প্রতিটি আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। চূড়ান্তভাবে একজন প্রার্থীকে রেখে সবাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন আগামী ৯ ডিসেম্বর। ওইদিন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। সেক্ষেত্রে ধানের শীষ নিয়ে নৌকার সঙ্গে কারা লড়াইয়ে নামবেন তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এমএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।