ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

জাপার হাইকমান্ডের আচরণে ক্ষুব্ধ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
জাপার হাইকমান্ডের আচরণে ক্ষুব্ধ মনোনয়নপ্রত্যাশীরা

ঢাকা: গোপালগঞ্জ-২ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী কাজী শাহিনকে সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাতে ফোন করে মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বলা হয়।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বেশ ফুরফুরে মেজাজে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসেন কাজী শাহিন। জাপা কার্যালয়ের এদিক ওদিক হাটছেন আর অপেক্ষা করছেন পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের জন্য।

কারণ, আব্দুর রাজ্জাকই দেবেন মনোনয়পত্র।
 
নিরুপায় হয়ে বেশ কয়েকবার য‍ুগ্ম দফতর সম্পাদককে ফোনও করেন শাহিন। শেষ পর্যন্ত দুপুর ১টার দিকে আব্দুর রাজ্জাক পার্টি অফিসে এক ঝলক এসেই বেরিয়ে যান। তার কাছে শাহিন মনোনয়নপত্র চাইলে রাজ্জাক অপেক্ষা করতে বলেন। বেলা গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও মেলেনি কাজী শাহিনের মনোনয়নপত্র।
 
ঠিক সন্ধ্যার পরে কাজী শাহিনের কাছে মনোনয়নপত্র পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, শেষ পর্যন্ত আমার সঙ্গে প্রতারণাই করা হলো। আমি তো বাড়ি চলে যেতাম। সোমবার রাতে আমাকে ফোন করে আজ সকালে অফিসে আসতে বলেছে মনোনয়ন নিতে। অবশেষে আর দেয়নি।
 
শুধু কাজী শাহিন একা নন মনোনয়ন দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে ভোলা-৩ আসনের শাহে আলম হাওলাদার, পটুয়াখালী-৪ আসনের শফিকুল আজম মুকুল, ঝিনাইদহ-১ আসনের মনিকা আলমসহ সারাদেশের শতাধিক নেতাকে। সবাই সকাল থেকে মনোনয়নের আশায় জাপা কার্যালয়ে অপেক্ষা করছেন।
 
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের অপেক্ষা দেখে সাংবাদিকরা জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রেজাউল করিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন, প্রায় ২শ’ আসনের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সোমবারই। এখন পাঁচ-ছয়জনের মনোনয়নপত্র দেওয়া বাকি আছে। এসব নেতারা কেন অপেক্ষা করছেন জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
 
ভোলা-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী শাহে আলম হাওলাদার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের না দিলে বলে দেবে। এভাবে সারাদিন অপেক্ষায় রাখার কোনো প্রয়োজন প্রয়োজন ছিল না। আমরা জাপার সঙ্গে আছি, থাকবো। তবে নিজেদের প্রতীকে নির্বাচন না করলে দলের অস্তিত্ব থাকবে না সেটা চেয়ারম্যানের বোঝা উচিত। শুধু জোটের পেছনে ঘুরলে আগামি নির্বাচনের আগে দল ধ্বংস হয়ে যাবে।
 
ঝিনাইদহ-১ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী মনিকা আলম বলেন, আমাকে ফোন করে ঢাকায় আনায় হয়েছে। বিগত ২০ বছর ধরে জাপার সঙ্গে আছি। গতবারের নির্বাচনেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। এবারও আফসোস নাই। না দিলে না দিবে। কিন্তু এভাবে অপেক্ষায় রাখার কোন মানে হয় না।
 
সকাল থেকে সন্ধ্যা থেকে জাপা কার্যালয়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, শতাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী অপেক্ষা করলেও মনোনয়নপত্র দেওয়ার কোনো খবর নাই।
 
মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলে সারাদেশের নেতাকর্মীদের ঢাকা এনেও না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে পার্টির যগ্ম দফতর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মানুষ বেঁচে থাকে আশায়। সবাইকে তো আর মনোনয়ন দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই স্বান্তনা দেওয়া হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৮
এসই/এসএম/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।