ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৮
উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে দুরভিসন্ধিমূলক ভাবে

ঢাকা: সরকার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুরভিসন্ধিমূলক ভাবে খালেদা জিয়াসহ বিএনপির জনপ্রিয় নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখাতে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক ও দিনাজপুরের পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি বলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।



তিনি বলেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সরকার পরিকল্পনা করেছে, একতরফা নির্বাচন করবে, গায়ের জোরে নির্বাচন করবে এবং জোর করে ক্ষমতায় থাকবে। সেজন্য এসব মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। ক্ষমতার নেশায় যেভাবে বুদ হয়ে আছে সেখানে শেখ হাসিনা, তিনি কখনও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে চাইবেন না। তারপরও বলবো সব বাঁধ ভেঙে জনগণ এগিয়ে আসবে।

রবীন্দ্রনাথের গান উল্লেখ করে তিনি বলে, বাঁধ ভেঙে দাও, বাঁধ ভেঙে দাও, জীবনের জয়গান গাইতে গাইতে স্বৈরাচারের সব বাঁধ ভেঙে জনগণ অবশ্যই নির্বাচনের দিন তাদের ভোট দেবেই।

সরকার হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের যিনি প্রধান তিনি যখনই পদত্যাগ করবেন সেটা গৃহীত হতে হবে। এটা আইন, এ আইন বরখেলাপ করে আপনারা তাদের মনোনয়ন বাতিল করছেন এর পরিণাম ভালো হবে না। অবিলম্বে তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করুন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করুন।

তিনি অভিযোগ করেন, তফসিল ঘোষণার শুরু থেকেই নির্বাচনের পরিবেশ যেন আরও অবনতিশীল হয়েছে। নৌকার পক্ষে হালে পানি না পাওয়ায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের শুধুমাত্র মিথ্যা মামলা দায়ের ও গ্রেফতার করেই সরকারের সাধ মিটছে না। এখন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘু-ঘু চরিয়ে দিতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। সারাদেশে প্রার্থীসহ বেছে বেছে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। প্রার্থীসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। আর এসব কিছু নেপথ্য থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে দু’টি শক্তিশালী কেন্দ্র-একটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও অন্যটি গণভবন, নির্বাচন কমিশন হুকুম-বরদার মাত্র।

নির্বাচন কমিশন হয় অন্ধ না হয় কানা দাবি করে রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার সরকারের পক্ষে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, আইন-আদালত, বিচারিক প্রক্রিয়া সবকিছুর ওপরই সরকার যেন সিন্দাবাদের জ্বিনের মতো সওয়ার হয়ে আছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গেলে মনোনয়নপত্রের দু'পাশ থেকে ধরে আছেন পুলিশের দু'জন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। অর্থাৎ পুলিশ কর্মকর্তারা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে। অথচ এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন উদাস কবির মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলো, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য কোন ব্যবস্থা নিলো না।

রিজভী অভিযোগ করেন, শনিবার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের নাটোরের বাড়িতে বৈঠক চলাকালে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। ফেনী-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী জয়নাল আবেদিনের বাসায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে এসব গ্রেফতার বন্ধ ও গ্রেফতার হওয়াদের মুক্তির দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৮
টিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।