ঢাকা, রবিবার, ২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ জুন ২০২৪, ০৮ জিলহজ ১৪৪৫

রাজনীতি

সংলাপের মাধ্যমে ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আনার চেষ্টায় আ’লীগ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
সংলাপের মাধ্যমে ঐক্যফ্রন্টকে সংসদে আনার চেষ্টায় আ’লীগ

ঢাকা: আবারও সংলাপের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সংসদে আনার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই সংলাপের উদ্যোগ নেবে দলটি। তবে সংলাপের ধরন কেমন হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি সবেমাত্র আলোচনায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

এ ব্যাপারে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ও মনোভাব বোঝার পর সংলাপের ধরন ও প্রক্রিয়া ঠিক করা হবে। প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে নির্বাচনের আগে যে ৭৫টি রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নিয়েছিলো সেই দলগুলোকে এক সঙ্গে আমন্ত্রণ জানানো হবে।

দলগুলোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করবেন। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনের আগে যেভাবে জোট ভিত্তিক সংলাপ হয়েছিলো সেটাও হতে পারে।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৮টি আসনে জয় পায়। এর মধ্যে বিএনপি ৬টি এবং গণফোরাম ২টি। নির্বাচনের পর গত ৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সদস্যরা এখনও শপথ নেননি। ইতোমধ্যেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বাতিলের দাবি তুলেছে এবং ঐক্যফ্রন্টের এমপিরা সংসদে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই সংলাপের মূল উদ্দেশ্য জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক বিএনপি এবং গণফোরামের যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তাদের সংসদে আনা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হলে একটা সমাধান বেরিয়ে আসবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন। একই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য গত নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলেও তারা মনে করছেন। এ কারণেই এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত ১২ জানুয়ারি আওয়ামী লীগোর কার্যনির্বাহী সংসদ ও উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনের আগে সংলাপ হয়েছিলো তাদের সঙ্গে আবার মতবিনিময় করার কথা জানান।  

পর দিন ১৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের এক যৌথসভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দলের সভাপতি যে দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচনের আগে সংলাপ করেছিলেন তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য তাদের সবাইকে একসঙ্গে আবার আমন্ত্রণ করবেন। তাদের সঙ্গে কিছু বিষয়ে মতবিনিময় করবেন এবং তাদের আপ্যায়ন করা হবে। এ ব্যাপারে আমরাও সবাই একমত হয়েছি।

এদিকে বিএনপির দিক থেকে ইতোমধ্যেই এ সংলাপের ব্যাপারে শর্ত দেওয়া হয়েছে। তারা নির্বাচন বাতিলের বিষয়টি এজেন্ডায় রাখলে সংলাপে যাবে, এমন বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে আসবে না এটা অনেক আগে থেকেই বলে আসছিলো। খালেদা জিয়ার সাজার পর তিনি কারাগারে গেলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয় খালেদা জিয়া ছাড়া দলটি নির্বাচনে যাবে না। পরে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সেটা সংলাপের মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে। এ বিষয়েও একটা সমাধান হয় তো বেরিয়ে আসবে।
 
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিলো, এবার সেটা করেনি। এজন্যও তো বিএনপি ধন্যবাদ পেতে পারে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা যাতে সংসদে এসে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন সে আহ্বান জানানো হবে। পাশাপাশি আগামী দিনে দেশের শান্তি ও উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সকলের সহযোগিতা চাওয়া হবে।  

নির্বাচন বাতিলের বিষয় নিয়ে সংলাপ হলে বিএনপি যেতে পারে দলটির এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ফারুক খান বলেন, বিএনপি খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যেতে চায়নি। পরে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, গত নির্বাচনের আগে যেসব দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছিলো তাদেরকে আপ্যায়নের আমন্ত্রণ জানানো হবে। এটাকে আগেই সংলাপ বলার কিছু নেই। তবে রাজনৈতিক দলগুলো একসঙ্গে বসলে অনেক কথাই তো হতে পারে। সেটা তো আগেই বলা যায় না।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯ 
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।