ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বিএনপি  

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০০ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৯
সুলতান মনসুরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে বিএনপি   সুলতান মনসুর। ফাইল ফটো

ঢাকা: ধানের শীষ প্রতীকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে  বিজয়ী সংসদ সদস্য (এমপি) সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের বিরুদ্ধে  আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপি। দলীয় ও ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে এককভাবে শপথ গ্রহণ করায় তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে দলটি। 

বৃহস্পতিবার (০৭ মার্চ) রাতে বিএনপির বেশ কয়েকজন নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের নেতার সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।  

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের হয়ে মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে এমপি জয়ী হন সুলতান মনসুর।

যদিও দেশজুড়ে ড. কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়েছে। বিএনপি ও গণফোরামের আটজন প্রার্থী জয় পেলেও তারা শপথ নেননি।  

পড়ুন>>প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাইলেন সুলতান মনসুর

তবে নানা নাটকীয়তার পর বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন সুলতান মনসুর। প্রথমে তার সঙ্গে সিলেটের একটি আসনে জয়ী গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান শপথ নেবেন বললেও পরে যাননি।  

ধানের শীষে জয়ী হয়ে জোটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে শপথ নেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, সুলতান মনসুর গণফোরাম থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তার দল ইতোমধ্যে তাকে বহিষ্কার করেছে। আর বিএনপি থেকে চিঠি নিয়ে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হয়েছেন।  

‘এখন তিনি যেহেতু বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে নিজের ইচ্ছায় শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দিয়েছেন তাই তার বিরুদ্ধে বিএনপিও যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। ’
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বাংলানিউজকে বলেন, কী ব্যবস্থা নেবো সেটা টেলিফোনে বলা যাবে না।  

আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই, নো কমেন্টস। ’
 
গত নির্বাচনের আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ১০ নভেম্বর সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর গণফোরামে যোগ দেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।  

গণফোরামের টিকিটে মনোনয়ন জমা দিলেও প্রতীকের জন্য চিঠি নেন বিএনপি থেকে। ফলে তিনি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং নির্বাচিত হন।
 
তবে সুর পাল্টে যায় নির্বাচিত হওয়ার পরদিন থেকেই। নিজ এলাকার জনগণের দোহাই দিয়ে প্রথম দিন থেকেই সংসদে যোগ দেওয়ার পক্ষে কথা বলেন তিনি।  

পরে গণফোরামে যোগ দেওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেন। যদিও গণফোরামের পক্ষ থেকে তার যোগ দেওয়ার ফরমও গণমাধ্যমে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে শপথ নেওয়ার পর বিকেলে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু দলীয় ‍কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে দলের প্রাথমিক পদ থেকে বহিষ্কার করেন।

একইসঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটি থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।  
 

এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট লেখা আছে কোনো সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কাজ করলে তার সদস্য পদ থাকবে না। সে হিসেবে সুলতান মনসুরকে যেহেতু গণফোরাম বহিষ্কার করেছে সেহেতু তার সদস্য পদ থাকার কথা নয়। কিন্তু এখন সরকারতো আইনের নানা ফাঁক-ফোকর দিয়ে তাকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করবে। যেহেতু তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এখন স্পিকার কী সিদ্ধান্তে নেবেন সেটা দেখতে হবে।  

আইনি ব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, সেটা দলের সিনিয়র আইনজীবীরা বসে সিদ্ধান্ত নেবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬৫১ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৮
এমএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।