ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

১৩ বছর ধরে স্থগিত গোলাম হত্যা মামলা, সরব সাবেক নেতারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
১৩ বছর ধরে স্থগিত গোলাম হত্যা মামলা, সরব সাবেক নেতারা

রাজশাহী: দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে স্থগিত হয়ে আছে রাজশাহীর চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মুর্শেদ হত্যা মামলা। তাই মামলাটির কার্যক্রম ফের সচল করতে সরব হচ্ছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ এ হত্যার রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চেয়েছেন। ফলে ফের আলোচনা এসেছে মামলাটি।

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ ও পরিকল্পনা উপ-কমিটির সদস্য জুবায়ের রুবন একটি লিফলেট তার টাইম লাইনে শেয়ার করেছেন। সেখানে লেখা আছে ‘শহীদ এস এম গোলাম মুর্শেদ হত্যার বিচারের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন চাই’।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ লিখেছেন ‘গোলাম মুর্শেদ’ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন ছাত্রনেতার নাম ছিলো,আমি তখন নিউ গভঃডিগ্রি কলেজে ছাত্রলীগ করতাম, তেজস্ক্রিয়তায় ভরপুর ছাত্রনেতার নাম ছিলো গোলাম, তখন ছাত্রলীগ করা খুব কঠিন ছিলো, তাকে হত্যা করা হয়েছিলো, আসামিদের নাম দেখলুম মাথা ঘুরছে, এরা ছাত্রনেতাকে হত্যা করে এখনও আওয়ামী লীগ করে, ইতিহাস মনে পড়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সময়কার সাংগাঠনিক সম্পাদককে হত্যার ঘটনায় যুবনেতা মোস্তফা মহসিন মন্টুকে নেত্রী ‘শেখ হাসিনা’ দল থেকে বহিষ্কার করেছিলো, সেইদিন সেই সময় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো ড. কামাল হোসেন। কিন্তু বহিষ্কার রক্ষা করতে পারেন নাই, ফলশ্রুতিতে ড.কামাল হোসেনকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিলো, গোলাম ভাইয়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি,,,আমিন’।

এদিকে, প্রায় ১৩ বছর ধরে স্থগিত রয়েছে রাজশাহীর ছাত্রলীগ নেতা গোলাম মোর্শেদ হত্যা মামলার কার্যক্রম। নিম্ন আদালতে এ মামলার রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের সবাই এ দীর্ঘ সময় ধরে জামিনে রয়েছেন। চাঞ্চল্যকর এ মামলার বিচারের রায় কার্যকরের আশায় দিন গুণছেন নিহত গোলামের পরিবারের সদস্যরা।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ১৯৯৯ সালের ২৬ মার্চ পরিকল্পিতভাবে রাজশাহীর কোর্ট ঢালুর মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ছাত্রলীগের তৎকালীন জাতীয় পরিষদ সদস্য ও মহানগর শাখার তৎকালীন সহ-সভাপতি গোলাম মোর্শেদকে। ছাত্রলীগের এ নেতাকে হত্যার মামলায় রাজশাহীর আদালতে ২০০৫ সালে ১১ জনের কারাদণ্ড হয়।  

এরা হলেন- আজিজুল আলম বেন্টু, রবিউল আলম বাবু, টগর, নাহান, শাহেনশাহ, টিয়া আলম, মিজানুর রহমান রনি, সাকশেশ, হাসনাইন, রফিকুল ও গাজি। এদের মধ্যে আজিজুল আলম বেন্টু এখন নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তার ভাই রবিউল আলম বাবু জেলা কৃষকলীগের সভাপতি। তবে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল আলম বেন্টু দাবি করেন, তাকে ও তার ভাই বাবুকে এ মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আসামি করা হয়েছিলো।

এছাড়া হত্যা মামলার আরেক আসামি মিজানুর রহমান ও গাজি মামলার রায় ঘোষণার আগে থেকেই পলাতক। শাহেনশাহ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। বাকিরা এখন সেভাবে রাজনীতিতে নেই। নিম্ন আদালতে রায়ের পর পলাতক ছাড়া অন্য আসামিরা প্রায় নয় মাস জেলে ছিলেন। পরবর্তীতে এই মামলাটি উচ্চ আদালতে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্থগিত করা হয়। এখনও মামলার কার্যক্রম স্থগিতই আছে।  

পলাতক দুই আসামি আর নিহত এক আসামি ছাড়া বাকিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন। এসএম গোলাম মুর্শিদের বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা এসএম আবদুল জব্বার আর নেই। মা নাজিরা বেগমও মারা গেছেন এক যুগ আগে। ছোট ভাই এসএম হারুন-উর-রশীদ এখন অন্তত দেখে যেতে চান ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচারের রায় কার্যকর হওয়ার দৃশ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এসএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।