মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন, সরকার ও দল আলাদা করাসহ দলের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেন হানিফ।
আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কেউ আসছেন কি না- জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্মের এগিয়ে আসা উচিত, দলের দায়িত্ব নেওয়া উচিত। আমাদের পার্টির সভাপতি শেখ হাসিনা। ১০-১৫ বছর পর দল পরিচালনা করার মতো সক্ষমতা তার নাও থাকতে পারে। সে কারণে এখনই বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমিটিতে প্রবেশ করলে ভালো হয়। তাহলে সভানেত্রী তাকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারতেন। সারা দেশের নেতাকর্মীরাও তাই চায়।
জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করা হয়, দলকে ঢেলে সাজানো হয়। নেতৃত্ব ঢেলে সাজানো হয়। কাউন্সিলের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় নেতাদের বাদ দিয়ে গতিশীল নেতার হাতে দায়িত্ব দেয়া হয়। এ সম্মেলন ঘিরে সারা দেশের মানুষের একটা আকাঙ্ক্ষা থাকে। কারণ দলটি দেশ স্বাধীন করেছে, অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে, উন্নয়ন করছে, দেশকে উন্নতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এবারের কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করা ও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের লক্ষ্য। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বাংলাদেশ। দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। সেই কারণে আগামী দিনের বাংলাদেশে শুধু স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি থাকবে। অর্থাৎ সরকার ও বিরোধী পক্ষ উভয়ই থাকবে স্বাধীনতার পক্ষের ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি। এমন বাংলাদেশ আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে এনে দিতে চাই। সব ধর্ম বর্ণের মানুষের বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই। সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
নতুন কমিটিতে নেতৃত্বের কেমন পরিবর্তন আসতে পারে- এ প্রশ্নের উত্তরে হানিফ বলেন, এটা বলা খুব মুশকিল। আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। দলের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। আর তা বাস্তবায়ন করেন দলের সভাপতি। কাউন্সিলরদের পর তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। কাউন্সিলররাই ঠিক করবেন আগামীতে নেতৃত্বে কারা আসবেন। দলের সভাপতির বিষয়ে বিকল্প কোনো চিন্তাভাবনা আওয়ামী লীগের তো নয়ই, দেশের সাধারণ মানুষও এটা ভাবে না। শেখ হাসিনা তার দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে দল ও দেশকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, তাতে সভাপতি হিসেবে তার বিকল্প ভাবার কোনো সুযোগ নেই। এর পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য যে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর ব্যাপারে কাউন্সিলরা সিদ্ধান্ত নেবেন। নেত্রী কাউন্সিরদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাকে যেখানে দায়িত্ব দিলে ভালো হয়, তাকে সেখানেই দেবেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে কিনা- জানতে চাওয়া হলে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, এটা আমরা বলতে পারি না। কাউন্সিলরদের অর্পিত দায়িত্ব নিয়ে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন সাধারণ সম্পাদক পরিবর্তন হবে কি না।
দল ও সরকার আলাদা করার একটা কথা শোনা যাচ্ছে- প্রসঙ্গটি তুলতেই তিনি বলেন, এটা আমরা বলতে পারি না, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। পার্টির কোনো ফোরামেও আলোচনা হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯
এসকে/এজে