ঢাকা: সম্মেলনের পর প্রায় ৯ মাস অতিবাহিত হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কারণে কমিটিগুলোর ঘোষণা ঝুলে রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানিয়েছেন।
তবে, ইতোমধ্যেই সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা প্রস্তুত হয়ে আছে। শোকের মাস আগস্ট শেষ হলে সেপ্টেম্বর থেকে এ সংগঠনগুলোর কমিটি ঘোষণার কাজ শুরু করা হতে পারে বলে আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান।
আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে গত বছরের ৬ নভেম্বর কৃষক লীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ২৩ নভেম্বর যুবলীগ, ২৯ নভেম্বর মৎস্যজীবী লীগ এবং ৯ নভেম্বর ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের সম্মেলন ১১ ও ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়।
এই সংগঠনগুলোর সম্মেলনের দিনই কাউন্সিল অধিবেশনের পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি পরে দেওয়া হবে বলে ওই দিন জানিয়ে দেওয়া হয়্। তবে সম্মেলনের পর গত প্রায় ৯ মাস অতিবাহিত হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি।
এর মধ্যে গত মার্চ মাস থেকে দেশে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে সার্বিক পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়ে। করোনার সংক্রমণ এড়াতে অন্যান্য বিষয়ের মতো রাজনৈতিক কার্যক্রমও স্থগিত রাখা হয়েছে।
তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলোর তালিকা ইতোমধ্যে প্রস্তুত হয়ে আছে। এ কমিটিগুলো আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের অপেক্ষা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে এসব সংগঠনের পূর্ণাাঙ্গ কমিটি দ্রুতই ঘোষণা করা হবে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা জানান।
এদিকে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই দেশের ৩০টির বেশি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন। এছাড়া শুরু হয়েছে শোকের মাস আগস্ট। এ শোকের মাসে কোনো সংগঠনের নতুন কমিটি দেওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। অতীতে কখনো শোকের মাসে দল ও সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়ন্। তাই শোকের মাস শেষে সেপ্টেম্বরের দিকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই নেতারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে যে পরিস্থিতি চলছে, এর মধ্যে কমিটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনা ও বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এদিকে নজর দেওয়া হবে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় কাজের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। নেতাকর্মী সবাই সংকট মোকাবিলায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে দ্রুতই সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতি সংগঠনগুলোর কমিটি দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, সহযোগী ও ভ্রাতৃতিমপ্রতি সংগঠনগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রায় চুড়ান্ত। এখন নেত্রীর (শেখ হাসিনা) অনুমোদেনের অক্ষোয়। শুধু একটু দেখা হবে যে, কোনো অনুপ্রবেশকারি, দুষ্কৃতিকারি, সুবিধাবাদী কেউ তালিকায় আছে কিনা। তারা যাতে সংগঠনগুলোর কমিটিতে ঢুকতে না পারে, সেই বিষয়টি একটু যাচাই-বাছাই করে দেখা হবে। এখন করোনা, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায়ই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। দ্রুতই এটা হয়ে যাবে, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলে। সাধারণত শোকের মাস আগস্টে কমিটি দেওয়া হয় না। আগস্ট শেষ হলে নেত্রী এ বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবেন।
বাাংলাদেশ সময় ১৯৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২০
এসকে/ওএফবি