ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রবীণ রাজনীতিককে হারালো ফেনী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২০
বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রবীণ রাজনীতিককে হারালো ফেনী বর্ষীয়ান নেতা আজিজ আহম্মদ চৌধুরী (মাঝে)/ ফাইল ছবি

ফেনী: প্রায় ছয় দশক ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফেনীর সর্বজন বিদিত বর্ষীয়ান নেতা আজিজ আহম্মদ চৌধুরী। রাজনৈতিক কর্মব্যাপ্তিতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে সততা ও জবাবদিহিতা পুঁজি করে নিজ দায়িত্ব পালনে সব সময় সচেষ্ট ছিলেন তিনি।

স্বচ্ছ একজন রাজনীতিক হিসেবে তিনি ফেনীর মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন এবং জেলার উন্নয়নে নিবেদিতভাবে কাজ করে গেছেন। পেয়েছেন ‘ক্লিন ইমেজ’ খ্যাতি।

আনন্দপুরে চৌধুরী বাড়িতে বাবা সুলতান আহম্মদ চৌধুরী ও মা আজিজের নেছা চৌধুরীর ঘরে ১৯৩৯ সালের ২ মার্চ জন্ম নেন আজিজ আহম্মদ চৌধুরী। তিনি আমৃত্যু ফেনী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। শুরুতে শিক্ষকতা করলেও পরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫ বছর তিনি আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৪ সালে শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে স্বর্ণপদক লাভ করেন তিনি।

আজিজ আহম্মদ চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন বর্ণাঢ্য। ১৯৬৪ সালে আনন্দপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৭৩ সালে ছাগলনাইয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর তৎকালীন সভাপতি আবুল কাশেম মারা গেলে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষে তাকে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। এছাড়া, ফেনী জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

আজিজ আহম্মদ দ্বিতীয় মেয়াদে ফেনী জেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি শহীদ পরিবারের সন্তান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার দাাদা আলহাজ্ব হোসেন উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীসহ পরিবারের সাত সদস্যকে একসঙ্গে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তার দাদার স্মৃতিতে ফেনীতে শহীদ হোসনে উদ্দিন বিপণিবিতান প্রতিষ্ঠা করা হয়।

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সমাজ সেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন আজিজ আহম্মদ। নিজ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত শাহ আলম চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন তিনি। এছাড়া, ফেনী ডায়াবেটিক সমিতি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, রোগী কল্যাণ সমিতি, প্রবীণ হিতৈষী সংঘসহ একাধিক সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। বাবা সুলতান আহম্মদ চৌধুরীর নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করেছেন ‘সুলতান অ্যান্ড সন্স’।

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে ৮১ বছর বয়সে ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতালে আজিজ আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে ফেনীর সব মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৭, ২০২০
এসএইচডি/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।