যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পাওয়ার পর ব্যক্তি বিশেষের ঈর্ষা আর হিংসার মুখে পড়েছেন তরুণ ব্যবসায়ী নিয়াজ মোর্শেদ এলিট।
তিনি দাবি করেছেন, একটি পক্ষ হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে তার নামে ভিত্তিহীন মনগড়া ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত অপপ্রচার চালাচ্ছে।
সোমবার তার সদস্য পদ বাতিল চেয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বিবৃতির জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার চেয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বিবৃতিতে তারা দাবি করেন, নিয়াজ মোর্শেদ এলিট কোনো কালে আওয়ামী লীগ বা দলের কোনো অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তার পরিবার বিএনপি পরিবার হিসেবে এলাকায় স্বীকৃত। তার বাবা মনিরুল ইসলাম ইউসুপ চট্টগ্রাম-১ মীরসরাই থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এলিটও স্থানীয় বিএনপির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পরিচিত।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কিছু অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
এলিট বলেন, “আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রীকে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বিশেষ ও পরিবার ছাড়া অন্যরা ভালোবাসতে পারবে না তা কিন্তু নয়। এখন আমার রাজনৈতিক কমিটমেন্টের কারণে আমার অবস্থান শক্ত হলে কারো ভীত নড়বড়ে হয়ে গেছে যদি ভাবে, সেটা তাদের বিষয়। আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে উনার একজন কর্মী হিসেবে কাজ করেছি, সামনেও করে যাব। রাজনীতি করে আমি এক টাকা অবৈধভাবে অর্জন করেছি তা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না। আমি দেশের সব নিয়ম কানুন মেনে ব্যবসা করি। রাজনীতি করি বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রীকে ভালোবাসি আর দেশের মানুষের পাশে থাকার ক্ষুদ্র চেষ্টা থেকেই। এখানে চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই। আল্লাহ কাউকে সম্মান দিলে সেখানে হিংসুক লোকজন কি তা কেড়ে নিতে পারে? আমিতো আমার রাজনীতি করছি। কারো বাড়া ভাতে ছাই দিচ্ছি না। তাহলে কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের কেন এতো মাথা ব্যাথা? মিরসরাই আমার জন্মস্থান সেটা তো অপরাধ হতে পারে না!”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে গিয়ে আমি পারিবারিক ব্যবসা থেকে বের হয়ে গেছি। আমার বাবা অন্য রাজনীতি করেন বলে তার সঙ্গেও আমার সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয়েছে। আমার নিজস্ব একটা পরিচয় আছে। দলের জন্য কাজ করছি। ক্রীড়াসহ নানা সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত দীর্ঘদিন ধরে। এরপরও কেন আমার বাবার কথা বলে আমাকে টেনে নামানোর চিন্তা? এসব গতবার আন্তর্জাতিক উপ কমিটির সদস্য পদ পাওয়ার সময়ও করা হয়েছিল। নেতৃবৃন্দ সব অবগত আছেন। আমি হলফ করে বলছি, আমি আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য কোনও দল করেছি এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারলে পদ ছেড়ে দেব। আমার বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার করা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন, মনগড়া ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত। ”
তরুণ এ রাজনীতিক আরও বলেন, “পদ পদবী প্রত্যেক কর্মীর জন্য অলঙ্কার স্বীকৃতি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগ সভাপতি পরশ ভাই আমাকে তাদের সাথে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন তাই কৃতজ্ঞ। কিন্তু পদে না রাখলেও আমি কাজ করতাম না তা নয়। সুতরাং একটা সদস্য পদ নিয়ে কারো এতো বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। আমার পিতা অন্যদল করে সেটা নিয়ে আমাকে বির্তকিত করার অপচেষ্টা হচ্ছে। উনিও তো আওয়ামী লীগই করতেন। উনি কেন দলত্যাগ করলেন, সেটারও কারণ বের করা দরকার। কেন তিনি আওয়ামী লীগে থাকতে পারেননি। এরকম আওয়ামী লীগের মতো গণমানুষের একটি দলকে যদি একটি পরিবার ও গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়, তাহলে তো সেটা দলের জন্য কখনো মঙ্গল বয়ে আনবে না। ”
এলিট বলেন, “রাজনীতিতে নানা মত থাকবে, তবে আর্দশের ঠিকানা একটাই, একজনই। আমাদের আর্দশিক নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আদর্শ বাস্তবায়নে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যে কোনও নাগরিকই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে পারে। আমিও স্কুল জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম। কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতি করার পর গতবার আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার কাজের মূল্যায়ন করে যুবলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দিয়েছেন। আমিও তাদের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করব। ”
তরুণ এ রাজনীতিক রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যবসায়িক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। এলিট চট্টগ্রাম খুলশী ক্লাব লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সভাপতি, জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ দাবা ফেডারেশান চট্টগ্রামের চিফ কো-অর্ডিনেটর, ব্রাদার্স ইউনিয়ন (ঢাকা ও চট্টগ্রাম) ক্রিকেট কমিটির সভাপতি, একুশে মেলা পরিষদের মহাসচিব, কালের কণ্ঠ শুভ সংঘের প্রধান উপদেষ্টা, চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের সদস্য ও শাহীন গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের আজীবন সদস্য।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘নিয়াজ মোর্শেদ এলিট ব্লাড ডোনার্স ক্লাব’। স্বেচ্ছাসেবামূলক এ সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে রক্তদান করা হয়।