ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের গৌরবান্বিত বিজয়ের মাসে জনগণ যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে মিছিল, সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করে ৭১ এর বিজয়কে উদযাপন করবে, তখন সরকার বিজয়ের মাস উদযাপনে বিকল্প হিসেবে মিছিল, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের ওপর কালিমা লেপন করেছে।
সরকারের চাতুরিপূর্ণ ও অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
রব বলেন, 'ভিন্নমত ও পথ'কে রাষ্ট্রযন্ত্র দ্বারা বল প্রয়োগ করে রুদ্ধ করার মানসিকতা জাতির জন্য অভিশাপ বয়ে আনছে। 'রাজনীতি বিহীন' সমাজ জনমনে বিচ্ছিন্নতার জন্ম দেয়, জনগণকে আত্ম উপলব্ধি থেকে বঞ্চিত করে এবং ব্যক্তির আত্মবিকাশের পথে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায়। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবের বিজয়ের মাসে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার হরণের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী পদক্ষেপ।
তিনি বলেন, জননিরাপত্তার অজুহাতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশকে নিষিদ্ধ করা রাষ্ট্রকে আরও দুর্বৃত্তপরায়ন করার অপচেষ্টা। গণতন্ত্রহীনতা সমগ্র সমাজকে ভয়ঙ্কর অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে অর্থাৎ সমাজকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে স্থবির করে মধ্যযুগের দিকে ধাবিত করছে। ভয়াবহ দুর্নীতি, হত্যা, ধর্ষণ ও চরম অব্যবস্থাপনা এ গণতন্ত্রহীনতারই ফসল যা সরকার উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ।
সংবিধান বহাল রেখে প্রতি ক্ষেত্রেই সংবিধান লংঘন করে সরকার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের যে বয়ান দিচ্ছে তা জাতির সঙ্গে নিম্নমানে একটি তামাশা দাবি করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, জনবিচ্ছিন্ন সরকার জননিরাপত্তা নয়, বৈধতা সংকটে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রায়শই সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার বাহানা খোঁজে। সেই ধারাক্রমেই সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধকরণে সরকারের সর্বশেষ এ পদক্ষেপ। দেশকে গণতন্ত্রহীন করে সরকার তাদের যে 'স্বপ্ন রাজ্য' গড়ে তুলেছে জনরোষের কারণে তা ক্রমাগতই অরক্ষিত হয়ে পড়ছে এবং সরকারের জন্য তা ভবিষ্যতে বড় ধরনের কুফল বয়ে আনবে।
তিনি সরকারের এ অবিবেচক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানাই ও অবিলম্বে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০২০
এমএইচ/আরবি