ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি বিএনপির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
লেখক মুশতাকের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি বিএনপির

ঢাকা: লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে অস্বাভাবিক মৃত্যু বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদ্ধারের এবং দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ দাবি জানানো হয় বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো গণমাধ্যমকে জানানোর উদ্দেশে রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার লেখক মুশতাক অসুস্থ হওয়ার পরও চিকিৎসা না দেওয়া এবং জামিন না দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সভায় মত প্রকাশ করা হয়, এ গণবিরোধী স্বৈরাচারী সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য সব সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে বিভিন্ন কালা-কানুন বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মত একটি ভয়ঙ্কর নির্যাতনমূলক আইনের মাধ্যমে জনগণের বাক-স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা, সব সাংবিধানিক অধিকার, স্বাধীনমত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে চলেছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭০০ ব্যক্তিকে এ আইনের আওতায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের বয়োবৃদ্ধ সম্পাদকসহ অসংখ্য সাংবাদিক, লেখক, পেশাজীবী আটক হয়ে বিনাবিচারে কারাগারে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। সম্প্রতি নোয়াখালীতে তরুণ সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কিও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলের সভায় সাংবাদিক বুরহান উদ্দিনের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।

সভায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতায় আটক সব ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করা হয় এবং গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বাতিলের জোর দাবি জানানো হয়।  


এছাড়া সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিতের পরিপ্রেক্ষিতে পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা এবং শিক্ষামন্ত্রীর ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয় এবং একই সঙ্গে জাহাঙ্গীর নগরসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে তালা দিয়ে অসহায় ছাত্র-ছাত্রীদের বল প্রয়োগের মাধ্যমে হল ছাড়তে বাধ্য করায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়। কোনো বিকল্প ব্যবস্থা বা এলাকাবাসীর সঙ্গে বিরোধ-মীমাংসার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে ছাত্রছাত্রীদের এভাবে বের করে দেওয়া চরম মানবিক অপরাধ।

সভায় সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচন ও সব পৌরসভার নির্বাচনে সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে চরম ব্যর্থতার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে বলেই চরম প্রতিকূল অবস্থায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোতে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, এ নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচনই নিরপেক্ষ অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের যোগ্য নয়। এ অনির্বাচিত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করাই তাদের প্রধান কাজ। এছাড়াও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের বিরোধিতা বিএনপি সব সময়ই করেছে। এ ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আগামীতে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন বিএনপি অংশ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।