ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

খালেদার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত অমানবিক: খন্দকার মাহবুব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, মে ৯, ২০২১
খালেদার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত অমানবিক: খন্দকার মাহবুব

ঢাকা: দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছর দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আবেদন নিয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অত্যন্ত অমানবিক বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

তার মতে, সরকারকে এই দায়ভার নেওয়া উচিত হয়নি।

চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ার কারণে যদি কোনো অঘটন ঘটে, তাহলে তার সম্পূর্ণ দায় সরকারকে বহন করতে হবে।

রোববার (৯ মে) ভার্চ্যুয়ালি দেওয়া এক বক্তব্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এ মন্তব্য করেন।

এর আগে রোববার (৯ মে) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রচলিত আইন অনুযায়ী (৪০১ ধারা) দ্বিতীয়বার সাজা মওকুফ করে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই তাদের আবেদন মঞ্জুর করা যাচ্ছে না বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৪০১ ধারা অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে যে সুবিধা দেওয়া হয়েছে সেটা দ্বিতীয়বার দেওয়ার সুযোগ নেই বলে ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তাই আমরা তাদের আবেদন মঞ্জুর করতে পারছি না। প্রলচিত আইন অনুযায়ী বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিদেশ যাওয়ার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। বলেছেন ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার বা আইনে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে নিম্ন আদালতে। তার সাজা আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে। যে কোনো আপিলে তার সাজা মওকুফ হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার কোথাও লেখা নেই যে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবে না বা প্রয়োজনের খাতিরে যেতে পারবে না।

তিনি বলেন, এটাতে (৪০১ ধারা) নির্বাহী আদেশের এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে, সরকার ইচ্ছা করলে যে কেনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সাজা মওকুফ করতে পারে, সাজা কমাতে পারে, সাজা থেকে শর্ত দিয়ে বা শর্ত না দিয়ে মুক্তি দিতে পারে। এক্ষেত্রে সরকার যদি শর্ত দিতো যে, তিনি বিদেশে যাবেন এবং চিকিৎসা শেষে দেশে চলে আসতে হবে। এছাড়া আইনে এমন কোনো বিধান নেই যে কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে চিকিসার জন্য যেতে পারবেন না।
 
আইনকে কঠোর নয়, মানবিকভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবী।

দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডিত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তীসময়ে গত বছরের ২৫ মার্চ তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশান অ্যাভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে খালেদা জিয়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০২১
ইএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।