ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

নাটোরে বিএনপি নেতা বাবু হত্যা মামলায় ৪৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২১
নাটোরে বিএনপি নেতা বাবু হত্যা মামলায় ৪৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট  সানাউল্লাহ নুর বাবু

নাটোর: দীর্ঘ ১১ বছর পর নাটোরের চাঞ্চল্যকর বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সানাউল্লাহ নুর বাবু হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে সিআইডি।  

এতে বনপাড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা কেএম জাকির হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খোকন মোল্লা, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলুসহ ৪৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে বড়াইগ্রাম সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তানজিম আলম তাবাসসুম এর আদালতে এই চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার। ১৫ পৃষ্ঠার চার্জশিটটি গত ২৪ জুন প্রস্তত করা হয় এবং আজ আদালতে দাখিল করা হয়।

চার্জশিটভুক্ত অপর আসামিদের মধ্যে বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনের ছোট ভাই কেএম জামিল হোসেন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কেএম জিল্লুর রহমান জিন্নাহ রয়েছে।  

এছাড়া মাসুদ সোনার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজাউল করিম রিকোন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম মিঠু, হাবিব, আব্দুল মোমিন, বাবলু মোল্লা, লুৎফর রহমান, বাবু ও জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক, সেলিম, হাসেম, হাসেম-২, গৌতম ঘোষ, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সরদার, সৈকত, রিপন সোনার, মালেক, মাহবুব, জনি, অন্যতম।

সিআইডির সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার এতথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, গত ২০১০ সালের ৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপি দেশব্যাপী দলীয় কর্মসূচি ছিল। কেন্দ্রীয় ওই কর্মসূচি পালনের জন্য তৎকালীন বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সানাউল্লাহ নুর বাবুর নেতৃত্বে বনপাড়া বাজারে মিছিল বের হলে হামলা চালায় সেখানকার স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর প্রকাশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুকে পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা।

এ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বাবুর স্ত্রী মহুয়া নুর কচি বাদী হয়ে পরের দিন ৯ অক্টোবর ২৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীকালে আদালতের মাধ্যমে সংযোজনের আদেশ নিয়ে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়। এদের মধ্যে বাদশা নামে এজাহার নামীয় একজন আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন। মামলাটি ইতোপূর্বে ৮ জন কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন। তিনি এই মামলার ৯ম কর্মকর্তা ছিলেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল হাই সরকার বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে প্রাপ্তবয়স্ক ৪১ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ৩ জনের বিরুদ্ধে দোষীপত্রসহ সর্বমোট এজাহার নামীয় ৪৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে আদালত।

এদিকে মামলার বাদী মহুয়া নুর কচি বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ সময় পরে হলেও মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ায় আমি সিআইডির কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আদালতের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

জানা যায়, বিএনপি নেতা সানা উল্লাহ নুর বাবু ২০০৬ সালের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। পরে ২০০৮ সালে তিনি মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০০৯ সালে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।