ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

বিএনপির সভায় আ. লীগ কাউন্সিলরের বক্তব্য!

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
বিএনপির সভায় আ. লীগ কাউন্সিলরের বক্তব্য!

সাভার (ঢাকা): ঢাকার ধামরাইয়ে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার ডাকা সভায় সাভার পৌরসভা আওয়ামী লীগের নেতা ও ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজান আহমেদের বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই বক্তব্যের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে।

এতে কাউন্সিলরের সমালোচনা করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই।

প্রকাশিত একটি ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, কুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সাইদুর রহমান একটি সভায় বক্তব্য রাখছেন। তার পাশেই টুপি মাথায় সাদা পাঞ্জাবি পরে দাঁড়িয়ে আছেন সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমজান আহমেদ। অপর একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ওই বিএনপি নেতার পাশে দাঁড়িয়ে হাত নাড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতা রমজান আহমেদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপি নেতা সাইদুর রহমান গত ১৯ আগস্ট ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়ন এলাকায় একটি আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে থানায় মামলা, ডিসি ও এসিল্যান্ড অফিস ফাইল খরচ বাবদ টাকা চাওয়ার একটি বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হলে সমালোচিত হয়ে আলোচনায় আসেন। তিনি একই স্থানে প্যান্ডেল সাজিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আরেকটি সভার আয়োজন করেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে জনসমাগম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় থানা পুলিশ। তবে ওই নির্দেশ অমান্য করেই সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে সাভার থেকে কর্মী বাহিনী নিয়ে সভায় যোগ দেন কাউন্সিল রমজান আহমেদ। ধামরাই থানা পুলিশ এসে সভা পণ্ড করলে প্রকল্প থেকে বেরিয়ে মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে আবারো বক্তব্য শুরু করে বিএনপি নেতা ও কাউন্সিলর রমজান আহমেদ। সেখানেই ধারণ করা ভিডিওর পাশাপাশি বিএনপি নেতা ও কাউন্সিলরের চিত্র উঠে আসে। পরে অবশ্য সেখানেও গিয়ে বিএনপি নেতাদের ধাওয়া করে পুলিশ সভা পণ্ড করে দেয়।

এনিয়ে ধামরাই থানা আওয়ামী লীগ ও সাভার পৌর আওয়ামী লীগ মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।

স্থানীয় নেতারা বলছেন, হাইব্রিড লোকজন যারা কোনদিন আওয়ামী লীগ করেনি তাদের এভাবে দলে এনে জনপ্রতিনিধি বানিয়ে দিলে ধীরে ধীরে তাদের আসল চরিত্র বেরিয়ে আসে। সুযোগ পেলেই দলের সঙ্গে তারা এমন বেইমানি করে। দলকে ব্যবহার করে তারা সবসময় নিজের স্বার্থ উদ্ধার করেছে কিন্তু দলের উপকার হয় এমন কোনো কাজ কোনদিনই তারা করেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রমজান আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি কোনো প্রোগ্রামে যায়নি। আমার ওখানে কিছু জমি আছে তো সেই জমির ওখানে গেছিলাম। ’

ধামরাই থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুস সালাম বলেন, আবাসন প্রকল্পটিতে বিচারাধীন একটি বিষয় নিয়ে তারা একটি সভা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই সভা করা হলে প্রকল্পের সঙ্গে আয়োজকদের সংঘর্ষ হতে পারে এই শঙ্কায় ও করোনা ভাইরাস রোধে জনসমাগম না করতে তাদের বলে দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা নির্দেশ অমান্য করেই সেখানে বক্তব্য দেয়। আমরা তাতে বাধা দেয়নি। এরপরে তারা ওই প্রকল্পে ঢুকে জনসভা করতে গেলে আমরা তা বন্ধ করে দিই।

সাভার পৌরসভার মেয়র আব্দুল গণি বলেন, রমজান আলী আমাদের পোস্টেড কোনো নেতা না। সদস্য শুধু। স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে বক্তব্যের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো বিষয়টা নিয়ে।

এ নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-২০ ধামরাইয়ের সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ বলেন, এভাবে প্রকাশ্যে চাঁদা চাওয়ার সভা করা অপরাধ। তাদের প্রতিহত করতে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই চাঁদার টাকা দেশবিরোধী কাজে ব্যবহৃত হতে পারে। এদের অচিরেই থামাতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।