ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

২০ দলীয় জোট সংস্কারের দাবি সেলিমের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৫, ২০২১
২০ দলীয় জোট সংস্কারের দাবি সেলিমের

ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি’র (একাংশ) মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

সভার মঞ্চে উপবিষ্ট বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, রিজভী ভাইয়ের কাছে আমার আবেদন ২০ দলীয় জোটকে সংস্কার করতে হবে। ২০ দলীয় জোট গঠন করার পর ৮-১০ বছর পর্যন্ত যারা একটা মানববন্ধন করতে পারেনি। যারা একটা মিছিল-সভা করতে পারেনি। তাদের ২০ দলে রেখে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের অপমাণ করার কি প্রয়োজন আছে। ২০ দলীয় জোটে যখন মিটিং ডাকা হয় তখন অনেক ২০ দলীয় নেতা সেখানে উপস্থিত হন যারা বিএনপি করলে থানা লেভেলের নেতাও হতে পারতেন না। তাদের জায়গা দিতে হয়। যে কারণে একটা অস্বস্তি আমরা বোধ করি, বিএনপিও বোধ করে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালের শেষ দিকে টলটলায়মান একটা অবস্থা। আওয়ামী লীগ তখন নির্বাচনকালীন একটা সরকার গঠন করার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রের অত্যন্ত ক্ষমতাধর একজন ব্যক্তি বিকেলে এসে আল্টিমেটাম দিয়ে গেলেন, কালকের মধ্যে যদি শপথ গ্রহণ না করেন পরিণতি কী হবে আমরা জানি না। আমরা হতবম্ব হতচকিত কিছুটা ভীত সন্ত্রস্ত। আমরা কয়েকজন আলোচনায় বসলাম। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সাহেবকেও আলোচনায় আহ্বান জানানো হলো। জেনারেল ইবরাহিম সাহেব আসলেন, কয়েক মিনিট বক্তব্য শুনলেন, তারপর স্যালুটের ভঙ্গীতে বললেন, আমি সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, আমি হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদ নই। আমি মুনাফেক না, আমি মুনাফেকী করতে পারবো না, স্যার আপনাকে স্যালুট। আপনারা থাকেন আপনাদের মোনাফিকী নিয়ে। উনি চলে যাওয়ার পরে আলোচনা ভেঙে গেলো। অনেকে তার কারণে মোনাফেকের খাতায় নাম লেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

এলডিপির (একাংশ) মহাসচিব সেলিম বলেন, আজকে পুরো জাতি দুই ভাগে বিভক্ত। এক ভাগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে সমস্ত জনগোষ্ঠী। আর একদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটা হিজরা জনগোষ্ঠী। এরা সংখ্যায় কম, ধিকৃত কিন্তু তাদের ভয় করে। আওয়ামী লীগ হলো ধিকৃত, সংখ্যায় কম একটা নপংসুক সরকার। সুতরাং এ যে ভয় এবং ভীতির একটা রাজত্ব এরা কায়েম করেছে এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটে আছি। আমরা এক সুরে এক নেতৃত্বে একবাক্যে কথা বলবো। এটা ২০ দলীয় জোটে থাকার প্রথম শর্ত। ইবরাহিম সাহেব মাঝখানে কয়েকদিন একজন কাপালিকের খপ্পড়ে পড়েছিলেন। আমি তখন ওনাকে বার বার বলেছি। এ কাপালিকের পেছনে জীবনের ১২টি বছর ব্যয় করেছি। এখান থেকে সরে আসেন। আলহামদুলিল্লাহ তিনি সরে এসে এখন পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করছেন।

সেলিম বলেন, ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ছিল এবং মূল দলগুলোকে বাইরে রেখে নির্বাচন করা। আওয়ামী লীগ সেক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয়েছে। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত ছিল বিএনপি এবং মূল দলগুলোকে নির্বাচনে এনে নির্বাচন করা। নির্বাচনের এক বছর আগে থেকে প্রতিটি টকশোতে বলেছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচনে যাওয়া আর গণ আত্মহত্যা করা এক কথা। আমরা গণ আত্মহত্যাই করেছি। আমরা খালেদা জিয়াকে ওই ৩০০ বছরের পুরোনো কারাগারের প্রকোষ্ঠে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে রেখে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। তাকে পিজি হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষমতা আমাদের ছিল না। আমরা সুর সুর করে নির্বাচনে গিয়েছি এবং দেখেছি কি হয়েছে।  

২০২৩ সালে কি হবে তারা প্ল্যান করছে। তাদের প্ল্যানে আছে কিছু রাজনৈতিক দলকে তারা নির্বাচনে নেবে। কিছু রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে নেবে না। কোনো অবস্থায়ই এ ধরনের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। নিজের অবস্থান বুঝে রাজনীতি করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে যৌথভাবে। আমাদের স্বপ্ন দেখতে হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা দেখবো তারেক রহমান বীরের বেশে এসে বাংলাদেশকে নেতৃত্বে দেবেন। সেই তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা সবাই আমাদের যার যার যে অবস্থান আছে, আমরা হয়তো সমুদ্রের এক বিন্দু শিশির হয়ে সেখানে থাকতে চাই।

কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিশিষ্ট ইসলামী বক্তা সৈয়দ কামাল উদ্দিন জাফরী, মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমীন, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মো. আবু তাহের, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, জাতীয় লীগের সভাপতি ড. শাহরিয়ার ফুয়াদ, কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য ফোরকান ইবরাহিম, ইকবাল হাসান মাহমুদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির, গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, কল্যাণ পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট মোস্তফা নূর প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।