ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

এডিসি হারুনের অপসারণ দাবি নূরের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০২২
এডিসি হারুনের অপসারণ দাবি নূরের

ঢাকা: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর রশীদের অপসারণ দাবি করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর।

শনিবার (৫ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টনের জামান টাওয়ারে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

নূর বলেন, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির প্রতিবাদে শুক্রবার (৪ মার্চ) আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। এর আগে গত ৫ দিন যাবত প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি যে তিন দফা দাবিতে আমরা একটা সমাবেশ করবো। প্রথম দফা দাবি ছিল, চাল-ডাল-তেল-পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা। দ্বিতীয় দাবি-তেল-গ্যাস-পানির প্রস্তাবিত বর্ধিতমূল্য বাড়ানো যাবে না। তৃতীয়ত, অসাধু ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম কমাতে হবে। এসব একেবারেই জনসম্পৃক্ত দাবি, জনগণের মনের কথা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমাদের এই প্রোগ্রাম করার কথা ছিল। যথাযথ নিয়মে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। তারা আমাদেরকে এই কর্মসূচি না করার জন্য বলেনি। কিন্তু আমরা দেখলাম, কর্মসূচির আগের দিন, রাত দশটায় শাহবাগ থানা থেকে আমাদের বলা হলো, আমরা যেন শহীদ মিনারে কর্মসূচি না করি।

তিনি বলেন, আমরা যখন তাদের কাছে জানতে চাইলাম কি কারণে কর্মসূচি করতে পারবো না। তখন তারা বললেন- সেখানে স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও কর্মসূচি আছে। ডাকসুর ভিপি হয়ে (আমি এখনও ভিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য, আমাকে কর্মসূচি করতে দেবে না, সেখানে মহানগরের স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মসূচি করবে, এটা কোনো যুক্তিতে আসে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছু বলেনি। তারপরও আমরা এই কথা শোনার পরে, সংঘাত এড়াতে আমরা শহীদ মিনারে যাইনি। মিছিল নিয়ে আমরা শাহবাগ থেকে ঘুরাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো ধরণের উস্কানি ছাড়াই আমাদের ওপরে আক্রমণ করে। আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর রশীদ।

তিনি আরও বলেন, এই হারুন অর রশীদ ওসি প্রদীপের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। শাহবাগে সমস্ত আন্দোলন কর্মসূচি সেটা ছাত্রদের অথবা শিক্ষকদের। সবার ওপরে এই হারুন অর রশীদ জঘন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। তাদের ওপরে হিংস্র পশুর মতো আক্রমণ করে।

নুরুল হক নূর বলেন, মোদি বিরোধী আন্দোলনে গত বছর ২৭ মার্চ আমাদের চারজন ছাত্র রবিউল, সজল, সোহাগ ও আল-আমিনকে এই হারুন ধরে নিয়ে গিয়েছিল শাহবাগ থানায়। ছাত্র অধিকার পরিষদ করার অপরাধে তাদেরকে গামছা দিয়ে বেধে, চোখে কাঁচা মরিচ দিয়ে নির্যাতন করেছে। গতকাল শুক্রবার মিছিলের মধ্যে আমরা যখন তার সাথে কথা বলতে গেছি যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের কর্মসূচি শেষ করতে চাই, আমরা প্রেসক্লাবে সমাবেশ করবো। সেখানে প্রদীপের ভূমিকায় থাকা হারুন আমাকে হুমকি দিয়েছে যে দেখি কেমনভাবে তোমরা সভা সমাবেশ করো। এই ধরণের আচরণ একজন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার হতে পারে না। আমরা হারুনকে অতি দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

নুরুল হক বলেন, আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লিখিত অভিযোগ দেব। যদি পুলিশ ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই দেশের জনগণ ব্যবস্থা নেবে।

হামলা করার সময় একজন পুলিশের ব্যাগে বোমা ছিল দাবি করে নূর বলেন, পুলিশ রড দিয়ে হামলা করেছে। এসময় একজন পুলিশের ব্যাগে বোমা ছিল। পাকিস্তানি হায়নারাও এভাবে জনগণের সঙ্গে ব্যবহার করেনি। আমাদের স্বাধীন দেশের পুলিশ গতকাল আমাদের সঙ্গে যা করেছে।

তিনি বলেন, পুলিশ দাবি করেছে গতকাল তারা হামলা করেনি। কিন্তু আমরা আপনাদের ভিডিও দেখাতে চাই। ডিজিটাল যুগে সবকিছু প্রমাণ আছে। সাংবাদিকদের হামলার ভিডিও দেখিয়ে বলা হয় এই হামলায় তাদের দলের ১১২ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে নূর বলেন, এই হামলার প্রতিবাদে আমরা পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেব। ওই কর্মসূচির সময় পরে জানানো হবে।

এ সময় গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম-আহবায়ক রাশেদ খান বলেন, জনগণের ওপর পুলিশের হামলা করার কোনো এখতিয়ার পুলিশের নেই। এই ভিডিও থাকা সত্ত্বেও পুলিশ বলছে সেখানে আমরা নাকি নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছি। অথচ এই ভিডিও প্রমাণ করে যে পুলিশ আমাদের ওপরে বিনা উস্কানিতে হামলা করেছে। আজকে স্বাধীন একটি রাষ্ট্রে পুলিশ কি আমাদের ওপর এভাবে হামলা করার এখতিয়ার রাখে? পুলিশকে কি সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে?

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, যুগ্ম-আহবায়ক ফারুক হাসান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০২২
এমএইচ/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।