ঢাকা: দরকষাকষি না করে বিএনপিকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সরকার সংবিধান থেকে নড়বে না বলেও জানান তিনি৷
মঙ্গলবার (১০ মে) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দরকষাকষি করে কোনো লাভ নেই। দরকষাকষিতে সরকার সংবিধান থেকে নড়বে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় ঠিক সেভাবেই সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা করবে।
কুমিল্লায় এলডিপি মহাসচিবের ওপর হামলার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই হামলার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। শেখ হাসিনার আমলে কোনো ধরনের অপকর্ম, কোনো প্রকার অনিয়মের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। এখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ঘটনাকে উপজীব্য করে ফখরুল সাহেব সরকারের অন্ধ সমালোচনা করেছেন বরাবরের মতো। ফখরুল সাহেব আজকাল সবকিছু এক চক্ষু হরিণের মতো দেখেন। না হলে এলডিপি মহাসচিবের গুলি ছোঁড়ার বিষয়টি তিনি দেখতে পেতেন। তার বিবৃতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে প্রকৃত সত্য লুকিয়ে শিবের গীত গাওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগ নয় সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে শেখ হাসিনা সরকার কমিশনকে একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারের যে সহযোগিতা দরকার সরকার সেটাই করবে। ইভিএম পরের ব্যাপার কেন? আপত্তি কোথায়? পৃথিবীর বহু দেশে ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে। আপনারা কি নির্বাচনে কারচুপি করতে চান? কারচুপি জালিয়াতি এড়ানোর জন্যই এই ইভিএম ব্যবস্থার চেয়ে কোনো আধুনিক কোনো পদ্ধতি নেই। এতে আপনাদের আপত্তি থাকবে কেন?
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ধরনের কথা দেশের মানুষ ১৩ বছর ধরে শুনছে। গত নির্বাচনের সময়ও বিএনপি এবং তাদের জোটের হাঁকডাক শুনেছে। কিন্তু পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়ালগে এসেছেন, প্রধানমন্ত্রী আহুত এবং নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা মুখে মুখে বলছে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভালো করেই জানে, দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের আসতেই হবে। তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই। আমি বিএনপিকে বলব, তারা যেসব কথা বলছেন, দরকষাকষির জন্য বলছেন। জনগণকে আস্থায় নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতার পরিবর্তনের আর কোনো বিকল্প নেই। দরকষাকষি না করে নির্বাচনে আসুন। আমরা তাদের অনুরোধ করছি, নির্বাচনে আসুন।
নির্বাচনে আনার জন্য সরকার বিএনপিকে কোনো ছাড় দিচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে ছাড়ের বিষয় নয়। আমরা তাদের বলছি, তারা দেশের একটা বড় দল। তারা নির্বাচনে আসুক, একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে এটা আমরা চাই। সেকারণে বলছি। নির্বাচনে আসা তাদের অধিকার। এটা কোনো সুযোগ না। সুযোগ বিতরণ করা হয়, অধিকার বিতরণ করা হয় না। এটা তাদের অধিকার তারা নির্বাচনে আসবে, আমি এটাই বুঝি।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী ১০০ আসনের বেশি আসনে ইভিএমে ভোট করার সক্ষমতা নেই এবিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা চাই, নির্বাচন কমিশন তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী করবে, এখানে তো আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তারা যদি না পারে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু আমরা আওয়ামী লীগ দলগতভাবে চাই। সেটা কি আমরা বলতে পারব না।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০২২
এসকে/আরআইএস