ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

মনোনয়ন না পেয়ে আ.লীগ নেতার পদত্যাগ, লড়বেন দলের বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
মনোনয়ন না পেয়ে আ.লীগ নেতার পদত্যাগ, লড়বেন দলের বিরুদ্ধে

নারায়ণগঞ্জ: নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন না পেয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আরিফ মাসুদ বাবু। পদত্যাগের পর তিনি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়বেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সোমবার (১৬ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের  মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় স্কাইলার্ক রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি এবার সোনারগাঁয়ের মোঘরাপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমার বাবা সোনারগাঁও থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৭০ এর নির্বাচনে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচিত (এম.সি.এ) বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম অ্যাডভোকেট সাজেদ আলী মিয়া। আমার ভাই নারায়ণগঞ্জ জেলা আ. লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সোনারগাঁও উপজেলা আ. লীগের সাবেক সভাপতি, ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদের সর্বকনিষ্ট এমপি এবং ১৯৮৬ এরশাদ সরকারের আমলেও বিপুল ভোটে নির্বাচিত এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোবারক হোসেন।
১৯৮৯ সালে সোনারগাঁও আ. লীগের সময়ে দলের হাল ধরেন। সোনারগাঁও আ. লীগের সভাপতি হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল হাসনাত। ২০০১ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত মাঠে নেমে দলের নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে সোনারগাঁওয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন এবং শেখ হাসিনাকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সারা বাংলাদেশে আন্দোলনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

সেই সময় আন্দোলন করতে গিয়ে পুলিশি নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গ্রেফতার হন কায়সার হাসনাত। যার পুরস্কার হিসেবে শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে কায়সার হাসনাতের হাতে নৌকা তুলে দেন। ফলে সোনারগাঁয়ের ৩ বারের এমপি এবং মন্ত্রী বিএনপির রেজাউল করিমকে ৮৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে চমক সৃষ্টি করেন এবং সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ২০১৪ তে এসে, জাতীয় স্বার্থে জোটের কারণে কায়সায় হাসনাতকে মনোনয়ন না দিয়ে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয় আসনটি। আমরাও নেত্রীর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে জোটকে স্বাগত জানিয়েছিলাম।

আমার আরেক ভাই, বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম মোশারফ হোসেন উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করাকালীন সময়ে গতবছর মারা যান। পরে উপ নির্বাচনে আমরা ভেবেছিলাম আমাদের পরিবারেই নৌকা প্রতীক দেবেন কিন্তু সে সময় নৌকা আমাদের না দিয়ে একজন সিনিয়র নেতাকে দিলেন, আমরা মেনে নিয়ে ওনাকে সমর্থন দিয়ে চেয়ারম্যান বানিয়ে দিলাম।

সর্বশেষ মোগরাপাড়া ইউনিয়ন যেটা আমাদের ৭০ বছরের ইতিহাস। মোগরাপাড়া ইউনিয়ন হলো সোনারগাঁও রাজনীতির রাজধানী, আওয়ামী রাজনীতির পূণ্যভূমি যার ধারক বাহক হলো আমাদের এই পরিবার। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ১০ বছর ধরে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনগনের সেবা করে আসছিলাম।  

দিন রাত পরিশ্রম করে জীবনের মায় ত্যাগ করে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি, তার বিনিময়ে আজ নৌকা থেকে বঞ্চিত হলাম। এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে!

বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যে পরিবারটির উত্থান, বঙ্গবন্ধুর গড়া আওয়ামী লীগের স্বর্ণ যুগে সেই পরিবারের এমন করুন পরিণতি, এমন অপমৃত্যু আমার কাছে মনে হয় আমিই ব্যর্থ। তাই আমার নেত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে সোনারগাঁয়ের সকল নেতা-কর্মীর কাছে ক্ষমা চেয়ে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।  

এদিকে একটি সুত্র জানায়, মূলত সোহাগ রনির বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়তেই পদত্যাগ করেছেন তিনি।

১৩ মে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পান ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি সোহাগ রনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০২২
এমআরপি/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।