ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

জনগণকে ঋণে জর্জরিত করে প্রধানমন্ত্রী উল্লাস করছেন: রিজভী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
জনগণকে ঋণে জর্জরিত করে প্রধানমন্ত্রী উল্লাস করছেন: রিজভী

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদ্মা সেতুর আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভী। বলেছেন, আপনি (শেখ হাসিনা) যে আলোকোজ্জ্বল উদ্বোধনের কথা বলছেন ৬৪টা জেলায় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আপনি করবেন।

এটা কীসের জন্য? এগুলো কার টাকায় করবেন? এগুলো তো জনগণের টাকা। জনগণকে ঋণের বোঝায় জর্জরিত করে আপনি উল্লাস করছেন? আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী এ দেশের শ্রেষ্ঠ একজন মুক্তিযোদ্ধার সহধর্মিনী কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বিছানায়, তার চিকিৎসা করার ন্যূনতম সুযোগ নেই।

সোমবার (১৩জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনি এত ঢাকঢোল পিটিয়ে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করছেন। বিভিন্ন দেশের ডেভলপমেন্ট দেখেছি। ১৯৭২ সালে সাগরের নিচ দিয়ে রেল লাইন নিয়ে গেছে সেখানে এত ঢাকঢোল দেখিনি। ঊনবিংশ শতাব্দীতে লন্ডনে মাটির নিচ দিয়ে রেললাইন নিয়ে গেছে, সেখানে তো এত ঢাক ঢোল পেটাতে শুনিনি।   ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নিউইয়র্কে মাটির নিচ দিয়ে ট্রেন লাইন নিয়ে গেছে তারা তো ঢাক-ঢোল পিটায়নি। আপনি এত ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন কীসের জন্য? যদি আপনার নিজের টাকায় তৈরি করা হতো বা আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি টাকা দিয়ে করা হতো তাহলে একটা কথা ছিল। পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে সাধারণ জনগণের টাকা দিয়ে। রিকশাওয়ালা, সিএনজিচালক, বা‌সচালক, ব্যবসায়ী এই যে পথচারী- এদের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রথমে যারা পদ্মা সেতুর কাজ নিয়েছিল রয়েল ব্যাংক তারা আপনাদের দুর্নীতির কারণে সরে গেছে। আপনার মন্ত্রী দুর্নীতির কথা বলেছে। আপনার উপদেষ্টা এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। এখন জনগণের ওপর অনেক ঋণ চাপিয়ে দিয়ে, চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে সেতু করে এখন বলছেন নিজের অর্থায়নে করেছেন। নিজস্ব অর্থায়নে বলতে একেবারে নিজের অর্থ দিয়ে করা তাহলে ঋণ নিয়েছেন কেন? এই মিথ্যা কথা কেন বলছেন? মিথ্যার ওপর দিয়ে এ সরকার চলছে।

তিনি আরও বলেন, আপনি পদ্মা সেতুকে অপয়া করছেন। আপনি পদ্মা সেতু থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে টুস করে ফেলে দিতে চেয়েছেন। যিনি দেশের সম্মান নিয়ে এসেছেন সেই ড. ইউনুসকে চুবানি দিতে চেয়েছেন। তাই জনগণ এখন মনে করছে এই পদ্মা সেতু দিয়ে যাওয়া যাবে না। কারণ এটা প্রথমে অপায়া করে দিয়েছেন।

বাংলা একাডেমি মহাপরিচালকের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বাংলা অভিধানে কিছু নতুন শব্দ সংযোজন করেন। প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ থেকে কিছু নতুন শব্দ আমদানি করেছেন এগুলো এখন অভিধানে সংযোজন করা দরকার। গোপালগঞ্জের শব্দ ‘টুস করে’, ‘চুবানি’ আমার মনে হয় এ শব্দগুলো আপনার ওখানে (বাংলা একাডেমিতে) সংযোজন করা দরকার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখনো উন্নত চিকিৎসা নেই। যদি থাকতো তাহলে মানুষ কেন ঝাঁকে ঝাঁকে ভারত, সিঙ্গাপুর এবং অন্যান্য রাষ্ট্রে যায়? দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হেঁটে জেলখানায় গেলেন। আর হুইল চেয়ারে করে বের হলেন। আপনি কী নির্যাতন করেছেন? আপনি খাবারের মধ্যে কি বিষ দিয়েছেন? গোটা জাতির মুখে এই প্রশ্ন।

রিজভী বলেন, মহিলারা একটা প্রোগ্রাম করছে, আর আপনি চারপাশে পুলিশ মোতায়েন করেছেন, আপনার এত ভয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করেও আপনার ভয় যায় না। আপনি বিরোধী দল দমন করার চেষ্টা করছেন। তাদের সভা-সমাবেশ করতে দিতে চান না এই ভয়ে যে আপনার কু-কীর্তি প্রকাশ পেয়ে যাবে।

মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০২২
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।