ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

ফরিদপুরে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের সম্মেলনের পর আরেক পক্ষের মহড়া!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
ফরিদপুরে ছাত্রলীগের এক গ্রুপের সম্মেলনের পর আরেক পক্ষের মহড়া!

ফরিদপুর: ফরিদপুরে নতুন কমিটি গঠন নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। পাল্টাপাটি হামলা-মামলা, বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনের পর এক গ্রুপের সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রতিপক্ষ গ্রুপ সেখানে সদলবলে অতর্কিত হানা দিয়ে উত্তেজনায় নতুন করে ঘি ঢেলে দিয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদের নেতৃত্বে এক গ্রুপের সংবাদ সম্মেলন হয় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে। সংবাদ সম্মেলন শেষে ফরিদপুর প্রেসক্লাব থেকে বের হওয়ার মুখে তাদের প্রতিপক্ষ গ্রুপ সেখানে হাজির হয়। তারা সেখানে একজন কর্মীকে চর-থাপ্পর মারে ও ছাত্রলীগের নেতাদের বহনকারী শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের মাইক্রোবাসে অস্ত্র রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এ সময় পুলিশ ওই গাড়ি তল্লাশি করে। তবে সেখানে আগে থেকেই পুলিশ মোতায়েন থাকায় অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।  

দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, জেলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বিবাহিত ও সাধারণ সম্পাদক চাকরি নিয়ে বাইরে থাকায় কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হয়। তবে এর বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার যে গুটিকয়েক লোক মানববন্ধন করেছেন, তাদের সবার নামেই মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে অসংখ্য মামলা রয়েছে। তাদের পকেট খুঁজলে বিভিন্ন অফিসের টেন্ডার মিলবে। বিভিন্ন মহলের শেল্টার নিয়ে তারা ধান্দাবাজিসহ নানা অপকর্ম করছেন।

সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফিফ বিন অর্ক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাহিম বিন হাদমির, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানসহ তাদের অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এই পক্ষের সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই রুকসুর সাবেক ভিপি ছাত্রলীগ নেতা কাওসার আকন্দের নেতৃত্বে অপর পক্ষ প্রেসক্লাবের সামনে হাজির হয়। তাদের হাতে এক কর্মী লাঞ্ছিত ও শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানের গাড়ি তল্লাশি করে হয়রানির অভিযোগ করা হয়। এরপর প্রেসক্লাব চত্বরে তারা সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।  

এ সময় বক্তারা বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে ফরিদপুরে ছাত্রলীগ কর্মী সবুজ মোল্যাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা হত্যা মামলার আসামি হয়ে পলাতক থাকা অবস্থাতে কোনো বর্ধিত সভা না করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি ভেঙে দিয়ে কাগুজে কমিটি করেছে। আমরা এই কমিটি মানি না। জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অমিয় সরকার, ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান বিপ্লব, মশিউর রহমান সুপ্ত, রাকিবুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মনির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, জেলা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কোন্দলের জের ধরে গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ানের অনুসারী শহর ছাত্রলীগের মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদের অনুসারী শহর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সজীব আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর এই দ্বন্দ্বে এক পক্ষের হামলায় গুরুতর জখম হন ছাত্রলীগকর্মী সৌরভ মালো। তার আগে ০৪ জুলাই শহরের বায় সবুজ মোল্যা নামে একজন ছাত্রলীগ কর্মী খুন হন। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ রিয়ানের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ প্রতিপক্ষের।  

এছাড়া গত ২৬ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দু’জনেই বিবাহিত বলে অভিযোগ তুলে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্রলীগের একটি অংশ প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ করেন। এসব নিয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন।

>> ফরিদপুরে ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক বিবাহিত, আছে সন্তানও! 

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।