ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

হাসপাতালের রোগীরাও জানে দেশে রিজার্ভ নেই: মান্না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
হাসপাতালের রোগীরাও জানে দেশে রিজার্ভ নেই: মান্না

ঢাকা: হাসপাতালের রোগীরাও নাকি জানে দেশে রিজার্ভ নেই। প্রধানমন্ত্রী এ অর্থ চিবিয়ে না খেলেও মানুষকে জ্বালিয়ে খাচ্ছেন।

রিজার্ভের অর্থও নাকি বিভিন্নভাবে নিজেদের জন্য খরচ করছেন। সে অর্থে গত ৫০ বছরে আওয়ামী লীগের মতো দুঃশাসন বাংলাদেশ দেখেনি বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত ‘২৮ অক্টোবর রাজনীতিতে হৃদয়হীনতা এবং বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

মান্না বলেন, দেশে রিজার্ভ নেই। সেটি হাসপাতালের রোগীরাও জানে। দেশে বর্তমানে রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার। যা সরকার স্বীকার করছে না। প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ চিবিয়ে খান না; মানুষকে জ্বালিয়ে খাচ্ছেন। রিজার্ভের টাকা আপনারা বিভিন্নভাবে নিজেদের জন্য খরচ করেন। সরকার চাল-ডাল-গমের আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্ভিক্ষ হওয়ার কথা বলেছেন। এটি সত্যি। কারণ তিনিই জানেন অর্থনীতির অবস্থা কী?

সরকারকে উদ্দেশ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো দুঃশাসন গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ দেখেনি। তারা শুধু লগি-বৈঠা দিয়েই মানুষ মারে না; আরও কতভাবে মানুষ মারে তার সব হিসাব আমাদের কাছে আসে না। আমি বলবো, বাবা এবার তোরা যা। তোরা গেলেই আমরা বাঁচি। প্রধানমন্ত্রী এত ক্ষমতা পান কীভাবে। দেশে আজকে শেখ হাসিনার কথা সব থেমে যায়। অর্থনীতি-রাজনীতি যাই বলেন না কেন!

মাহমুদুর রহমান মান্না আরও বলেন, বিএনপির সমাবেশে মানুষের জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করার কথা বলছে। আওয়ামী লীগ ১/২ টা সমাবেশ করলেই তাদের মন খারাপ হয়ে যাবে। কারণ, মানুষ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জেগেছে। আওয়ামী লীগকে ছেড়ে দিয়েছে। সময় এসেছে মানুষ বিদ্রোহ করেছে। লঞ্চ-বাস বন্ধ করে কোনো লাভ হবে না। আমি বিএনপি করি না। কিন্তু আমি শেখ হাসিনার পতন চাই। এই সরকারের পতনের ঘণ্টা বেজে গেছে। আওয়ামী লীগের পতন শুধু দিনের ব্যাপার। এমন অবস্থা আসবে যখন পতনের দিন গুনতে থাকবে মানুষ।

বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তিনি বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশে কত মানুষ হবে তা জানি না। কিন্তু বিএনপি নেতা সমাবেশে কী বলবেন? বলবেন, আমরা আর এখান থেকে যাব না তুই (হাসিনা) যা? কী বলবে তা আগেই ঠিক করে নিতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে মানুষের জন্য কী করবে- তা এখনই বলেন মানুষকে। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ সরকার বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি করবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুধু নির্বাচনের ক্ষমতা পাবে; কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন করতে পারবে না।

মান্না আরও বলেন, রাজনীতি হওয়া উচিত সুকুমার বৃত্তি ও মহৎ পেশা হিসেবে। যদি তাই হয় তাহলে রাজনীতিতে এতো ঘৃণা বিদ্বেষ কেন? আমাদের দেশে সন্ত্রাস আর হানাহানি বন্ধ না হলে দেশের মানুষ শান্তি পাবে না।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাদা মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বর্বর দল। তারা ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে হত্যা করে লাশের উপর নেচেছে। তাদের মানবতা নেই। তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। এ জন্যই ত্যাগী নেতারা আওয়ামী লীগ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। আমরা আর কাঁদতে চাই না। আমাদেরকে এবার মুক্তি দেন। বাংলাদেশে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেওয়া হবে না। সরকার এর ফায়সালা না করলে ফয়সালা হবে রাজপথে। সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করা আমাদের মূল দায়িত্ব। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে আমাদের। এখন সরকারকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ধাক্কা দিতে হবে। আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই। ধাক্কা দিলেই তারা পড়ে যাবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা রোটারিয়ান এম নাজমুল হাসান। সঞ্চালনায় ছিলেন ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমান। বক্তব্য জাতীয় পার্টির নেতা আহসান হাবীব রিঙ্কন, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ইসমাইল তালুকদার খোকন, আমীর হোসেন বাদশা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
এমকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।