ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

ইরান-তুরস্ক সীমান্তে জিম্মি সানাউল্লাহদের কথা কি আমরা ভুলেই থাকবো!

মোহাম্মদ আল-আমীন, সৌদি আরব | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১২
ইরান-তুরস্ক সীমান্তে জিম্মি সানাউল্লাহদের কথা কি আমরা ভুলেই থাকবো!

রিয়াদ: গত ৫ জুন অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম এ “আপু আমার জান বাঁচা, ইরান-তুরস্ক সীমান্তে জিম্মি অর্ধশত বাংলাদেশি” শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়।

কিন্তু এরপর থেকে তাদের ব্যাপারে সরকারের কোনো উদ্যোগের খবর জানা যায়নি।

অপহৃত সানাউল্লাহ ওরয়ে আতাউল্লাহর ভাই ফয়েজুল্লাহ আক্ষেপ করে বাংলানিউজকে বলেন, “এতো বড় একটা ঘটনা সংবাদপত্রে প্রকাশ হওয়ার পরেও কয়েকজন সাংবাদিক ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে অপহৃতদের পরিবারের সাথে কেউই এ পর্যন্ত যোগাযোগ করেননি।

সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্সের যোগানদাতা প্রবাসীদের একটি দলের এমন বিপদের দিনে আমাদের অ্যাম্বেসিগুলো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বৈদেশিক কর্মকসংস্থান মন্ত্রণালয় কোনো উদ্যোগ না নিয়ে কিভাবে অলস সময় পার করছেন- এ প্রশ্ন প্রবাসীদের বিষ্মিত করছে। সৌদি আরব, ওমান, আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা বিষয়টিতে সরকারের দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ আশা করছেন।

বাংলানিউজের ওই খবরে জানা যায়, ওমানপ্রবাসী আতাউল্লাহ ওরফে সানাউল্লাহ (২২) সহ প্রায় অর্ধশত বাংলাদেশি ইরান-তুরষ্ক সীমান্তের দুর্গম এলাকায় বন্দি হয়ে আছেন মুক্তপণলোভী দুর্বৃত্তদের হাতে।

সানাউল্লাহ’র বাবা ফেনী শাহজালাল ইসলামিয়া তামিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হাই জানান,ইরান ও বাংলাদেশের ওই দুর্বৃত্তচক্র তাদের মুক্তির বিনিময়ে বাংলাদেশে পরিবার পরিজন ও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা স্বজনদের কাছে মোটা অংকের টাকা ‍অর্থ দাবি করেছে। দুর্বৃত্তদের বাংলাদেশি স্যাঙ্গাতরা ফেন করে জিম্মিদের স্বজনদের কাছে মুক্তিপণের টাকা দাবি করছে বারবার। অন্যথায় তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে। জানা গেছে এরই মধ্যে একজনকে হত্যাও করেছে তারা।

মঙ্গলবার ফেনী থেকে সেলফোনে সানাউল্লাহর বড় বোন উম্মে সালমা বাংলানিউজকে জানান, অপহরণকারীরা জিম্মি বাংলাদেশিদের নির্যাতন করে তাদের আর্তচিৎকার সেলফোনে স্বজনদের শোনাচ্ছে আর বলছে দ্রুত মুক্তিপণের অর্থ পরিশোধ করতে।  

দুর্বৃত্ত-দালাল চক্রের খপ্পড়ে পড়া ওই বাংলাদেশিরা ওমান-দুবাই এর সমুদ্রোপকূলে মাছ ধরার পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তাদেরকে সমুদ্রপথে গ্রিসে নিয়ে যাবার লোভ দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে বাংলাদেশি টাকায় এক থেকে দেড় লাখ করে টাকা নেয়  দালাল চক্র।

পরে তাদেরকে ইরান উপকূলে নিয়ে তুরস্কের সীমান্ত এলাকায় বন্দি করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে।  

সর্বশেষ তথ্যে শনিবার অপহৃত সালাউল্লাহর ভাই সৌদি আরব প্রবাসী ফয়েজুল্লাহ বাংলানিউজকে জানান,অপহরণকারীরা প্রতিদিন একাধিকবার ফোন করে মুক্তিপণের টাকা দাবি করছে অন্যথায় তাদেরকে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দিচ্ছে।

তিনি বাংলানিউজকে আরো জানান, আটককৃদের কয়েকজনের পরিবার ইতিমধ্যে জমিজমা বিক্রি করে মুক্তিপণের দেড়লাখ টাকা করে পরিশোধ করলেও বাকীদের টাকা শোধ না করায় কাউকেই মুক্তি দিচ্ছে না তারা। সবার টাকা পরিশোধ হলে সবাইকে একসাথে মুক্তি দেয়া হবে বলে জানায় অপহরণকারীরা।

সরকার আর সময় ক্ষেপন না করে অতিদ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে তাদেরকে জীবিত ফিরিয়ে আনবে বলে আশায় দিন পার করছে ইরান-তুরস্ক সীমান্তে আটক প্রবাসীদের পরিবার।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ০৯ জুন, ২০১২
সম্পাদনা : আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর
[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।