ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

প্রবাসে বাংলাদেশ

সাগর-রুনি হত্যার বিচারে জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৬, ২০১২
সাগর-রুনি হত্যার বিচারে জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা

বন(জার্মানি): সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও দ্রুত তদন্তে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেছেন জার্মানিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকরা৷ এ দাবিতে মঙ্গলবার বনে জাতিসংঘ কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

স্বতস্ফূর্ত মানববন্ধন শেষে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে বনে বসবাসরত বাঙালি কমিউনিটি।



স্থানীয় সময় সকাল ৯টা থেকে ৩০ মিনিটব্যাপী এ মানববন্ধনে বাঙালি ছাড়াও বিভিন্ন দেশের নাগরিক ও ডয়েচেভেল’র কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় তারা এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড ও ব্যানার প্রদর্শন করেন।

জাতিসংঘের মহাসচিবের বরাবর পাঠানো স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘হত্যাকাণ্ডের পর তিন সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনো পুলিশ খুনিকে চিহ্নিত বা আটক করতে পারেনি। বরং পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এটি জনসাধারণের মধ্যে হতাশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। ’

সাগর-রুনির হত্যকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে মহাসচিবের কাছে পাঠানো ওই চিঠিতে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।

মানববন্ধন অংশগ্রহণকারীরা জানান, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা মনে করছি, এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে আমরা কোনো আশার আলো দেখতে পাচ্ছি না। তাই আমরা জাতিসংঘের মহাসচিব বরাবর চিঠি লিখতে বাধ্য হয়েছি। আমরা এ বিষয়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করি। ’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মার্কিন নাগরিক ও সাগর সারওয়ারের ডয়েচে ভেল’র সাবেক সহকর্মী সারাহ বেরনিং বলেন, ‘আমরা এ হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করছি। শুধু এ ঘটনাই নয়, সারা বিশ্বেই সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দাবি করছি। ’

সাগর সরওয়ারের সহকর্মী মারিনা জোয়ারদার বলেন, ‘তদন্ত নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। এটি স্বচ্ছ নয়। এছাড়া বিচার বিভাগের একটি নির্দেশের কারণে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্য সরবরাহের বিষয়টি খর্ব করা হয়েছে বলে আমি মনে করি। ’

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ডয়েচে ভেল’র আন্তর্জাতিক বিভাগের কর্মী ক্রিস্টিন রাবে বলেন, ‘গোটা বিষয়টি নিয়ে আমি হতাশ। এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে, এ হত্যাকাণ্ডের আড়ালে অন্য কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কিনা। ’

অধ্যাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদ জানাতে এখানে এসেছি। এর বিচার করতে হবে। ’

বন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. মাযহারুল ইসলাম বলেন, ‘জাতিসংঘ যেন এ তদন্তে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করেন- এটিই আমাদের আবেদন। আমরা জাতিসংঘের মাধ্যমে সারা বিশ্বকে এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানাতে চাই। ’

মানববন্ধন শেষে জাতিসংঘের মহাসচিব বরাবর উপস্থিত সবার স্বাক্ষর সম্বলিত চিঠি জমা দেওয়া হয়। জাতিসংঘ বন কার্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা ডুকো জুকানভিক ওই চিঠি গ্রহণ করেন।

জার্মানিতে বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিরা জানিয়েছেন, সাগর-রুনির খুনিদের খুঁজে বের না করা ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাদের প্রতিবাদ, আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। ১৮ মার্চ ঢাকায় সাংবাদিকদের সমাবেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বার্লিনে বাঙালিদের একটি সমাবেশ করা হবে। একই দিন একই সময়ে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে সংহতি সমাবেশ করার আহ্বান জানান প্রবাসীরা৷

উল্লেখ্য, সাগর সাওয়ার ২০০৮ থেকে ২০১১ সালের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জার্মানির আন্তর্জাতিক বেতার ডয়চে ভেলেতে কর্মরত ছিলেন৷ এ সময় তিনি সপরিবারের বন শহরে অবস্থান করেন।

এরপর তারা গত বছর দেশে ফিরে যান এবং সাগর বেসরকারি টেলিভিশন মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। রুনি ফিরে যান এটিএন বাংলায়৷

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।