ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়

কাজী আবুল কালাম সিদ্দীক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৫
যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়

মাসয়ালা : রোজা অবস্থায় গীবত বা পরনিন্দা-পরচর্চা করলে, গালি-গালাজ করলে, টিভি-সিনেমা ইত্যাদি দেখলে, গান-বাদ্য শ্রবণ করলে এবং যে কোনো বড় ধরনের গোনাহে লিপ্ত হলে রোজা মাকরুহ হয়ে যায়। এ কাজগুলো সর্বাবস্থায়ই হারাম- তা তো বলাই বাহুল্য।

এ বিষয়ে হাদিসে কুদসিতে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে তখন সে যেন অশালীন কথাবার্তা না বলে ও হৈ-চৈ না করে। ’ -সহিহ বোখারি: হাদিস নং ১৯০৪

আবু দাউদ শরিফে রেওয়ায়েতে এ শব্দ রয়েছে, ‘রোজাদার যেন কোনো অন্যায়-অপরাধে লিপ্ত না হয়। ’ -হাদিস নং ৩৩৬৩

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা-প্রতারণা ও গোনাহের কাজ ত্যাগ করে না আল্লাহতায়ালার নিকট তার পানাহার থেকে বিরত থাকার কোনো মূল্য নেই। ’ -সহিহ বোখারি: হাদিস নং ১৯০৩
 
মাসয়ালা : কুলি করার সময় গড়গড়া করা এবং নাকে পানি দেওয়ার সময় ওপরের দিকে পানি পৌঁছানো বা টেনে নেয়া মাকরুহ। হজরত লাকিত ইবনে সবিরা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নাকে পানি দেওয়ার সময় ভালোভাবে নাকে পানি দাও, তবে রোজাদার হলে নয়। ’ -জামে তিরমিজি: হাদিস নং ৭৬৬
 
মাসয়ালা : এমন কাজ করা মাকরুহ, যার দ্বারা রোজাদার নিতান্তই দুর্বল হয়ে পড়। যেমন শিঙ্গা লাগানো।

মাসয়ালা : রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে বা ইনজেকশন ইত্যাদি দ্বারা রক্ত বের করলে রোজা ভাঙ্গবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এ পরিমাণ রক্ত বের করা মাকরুহ, যার দ্বারা রোজাদার খুব দুর্বল হয়ে যায়। সাবেত আলবুনানী (রহ.) বলেন, হজরত আনাস (রা.) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, রোজা অবস্থায় শিঙ্গা লাগানোকে কি আপনারা মাকরুহ মনে করতেন? তিনি বলেন, ‘না, তবে এ কারণে দুর্বল হয়ে পড়লে তা মাকরুহ হবে। ’ -সহিহ বেখারি: হাদিস নং ১৯৪০

মাসয়ালা : বিনা প্রয়োজনে কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করলে বা চিবালে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৯; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল: ৪/৫৭৮; জাওয়াহিরুল ফাতাওয়া: ১/২২

মাসয়ালা : ইচ্ছাকৃতভাবে মুখে থুথু জমা করে তা গিলে ফেললে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া: ১/১৯৯; আপকা মাসায়েল আওর উনকা হল: ৪/৫৭৯

মাসয়ালা : অনেকে দাঁতের ব্যথা দূর করার জন্য গুল দিয়ে দাঁত মাজে আবার কেউ কেউ দাঁতের মাড়িতে গুল রেখে দেয়। গুলের মধ্যে এক প্রকার স্বাদ বা ঝাঁজ আছে। অত্যধিক প্রয়োজন ছাড়া তা ব্যবহার করা মাকরুহ হবে। অপারগতার সময় ব্যবহার করা যাবে। তবে যদি মুখের লালা বা থুথুর সঙ্গে গুলের কিছু অংশ পেটে চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। - ফতোয়ায়ে কাজিখান: ১/২০৪, ফতোয়ায়ে আলমগীরী: ১/১৯৯, আল বাহরুর রায়েক-২/৪৮৮-৪৮৯, ইমদাদুল ফতোয়া: ২/১৩৭, ফতোয়ায়ে হক্কানি: ৪/১৬৭

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘন্টা, জুন ২২, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।