ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অপার মহিমার রমজান

তারাবি পড়াতে হাদিয়া নেয় না ১৪ বছর বয়সী হাফেজ তালহা

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২২
তারাবি পড়াতে হাদিয়া নেয় না ১৪ বছর বয়সী হাফেজ তালহা

চাঁদপুর: রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত নিয়ে আমাদের মাঝে এসেছে পবিত্র মাহে রমজান। এ মাসের প্রতিটি ইবাদতই গুরুত্বপূর্ণ ও বেশি বরকতময়।

এর মধ্যে তারাবি’র নামাজ অন্যতম।  

দেশ ও বিদেশে রমজান মাসে মসজিদগুলোতে তারাবি নামাজে পবিত্র কুরআন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়া হয়। এতে অনেক মসজিদে হাফেজদের হাদিয়া দিয়ে থাকে মসজিদ পরিচালনা কমিটি। কিন্তু এর মধ্যেও ব্যতিক্রম আছে কোনো কোনো মসজিদে। তেমনি একটি মসজিদ চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের ইসলামিয়া তাফাজ্জল কাজী হাফিজিয়া মাদরাসা মসজিদ। এ বছর এখানে তিনজন কোরআনে হাফেজ কোনো হাদিয়া ছাড়াই তারাবি’র নামাজ পড়াচ্ছেন।  

হাফেজ আব্দুল্লাহ জিহাব, হাফেজ নাজমুল হাসান ও হাফেজ তালহা বাংলানিউজকে জানালেন, হাদিয়া নয়, শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারা তারাবি’র নামাজ পড়াচ্ছেন।

রোববার (৩ এপ্রিল) প্রথম রমজানে মনুফা কমপ্লেক্সের হাফিজিয়া মাদরাসায় দেখা হয় এ তিন হাফেজের সঙ্গে। তারা এর আগেও হাদিয়া ছাড়াই তারাবি’র নামাজ পড়িয়েছেন। তিনজনের মধ্যে একজন মাত্র ১৪ বছর বয়সী হাফেজ মো. তালহা।  

সে ২০২১ সালে এ মসজিদে প্রথম তারাবি’র নামাজ পড়ায়। এছাড়া আব্দুল্লাহ তিন বছর ও হাসান পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন মসজিদে তারাবি’র নামাজ পড়াচ্ছেন। আব্দুল্লাহ ও হাসান ইসলামিয়া তাফাজ্জল কাজী হাফিজিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতাও করেন। তাদের দু’জনের বয়স ২৫ বছরের মধ্যে।

মাদরাসার মুহ্তামিম হাফেজ মাওলানা মো. আবুল কাশেম বাংলানিউজকে বলেন, ২০১৮-২০১৯ সালে মনুফা কমপ্লেক্সের আওতায় ইসলামিয়া তাফাজ্জল কাজী হাফিজিয়া মাদরাসা মসজিদ নির্মাণ হয়। নির্মাণ কাজে ব্যয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নক্সা মিস্ত্রি ও চাঁদপুরের স্থানীয় মিস্ত্রিদের হাতে গড়া মসজিদটির বাইরের গেট দিল্লির শাহী মসজিদের মতো। ভেতরের কিছু নকশা তাজমহলের আদলে করা হয়েছে। কমপ্লেক্সের অর্থয়ানে এই মসজিদ নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধান করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী হুমায়ুন কবির।

তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালে এ মসজিদে তারাবি’র নামাজ আদায় শুরু হয়। এ বছরও চলমান। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত- এ মসজিদে সব সময়ই কোনো ধরনের হাদিয়া ছাড়া কোরআনে হাফেজরা তারাবি’র নামাজ পড়াবেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মনোরম এ মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বাড়ছে। দোতলা এ মসজিদে একসঙ্গে ছয় শতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। শুক্রবারে জুম’আর নামাজে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যায়। মসজিদের প্রাণবন্ত মনোরম দেখে অনেক দূর থেকেও মুসল্লিরা এখানে নামাজ পড়তে আসেন।

স্থানীয় বাসিন্দা গাজী মো. ইমাম হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এ এলাকার লোকজন খুবই ধর্মভীরু। এলাকার প্রত্যেকটি মসজিদ খুবই সুন্দর কারুকাজ সম্পন্ন। ইসলামিয়া তাফাজ্জল কাজী হাফিজিয়া মাদরাসা মসজিদে এ বছর তিনজন হাফেজ কোনো হাদিয়া ছাড়া তারাবি’র নামাজ পড়াচ্ছেন। এটি এ এলাকার জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে। কারণ অধিকাংশ মসজিদেই হাদিয়ার বিনিময়ে তারাবি’র নামাজ পড়ানোর রীতি চালু আছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।