ঢাকা: মঙ্গলবার সফটওয়্যারগত সমস্যার কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ’র (ডিএসই) একটি সাইলোর ভিতরে থাকা ৪১টির মতো ব্রোকারেজ হাউজে (ট্রেকহোল্ডার) হঠাৎ করে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়।
এ কারণে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে প্রায় এক ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ থাকে।
মঙ্গলবার (০৩ মার্চ) দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে এ সমস্যায় পড়ে ব্রোকারেজ হাউজগুলো। যা দিনের লেনদেন শেষ পর্যন্ত চলছিল।
সমস্যার কারণে ব্রোকারেজ হাউজগুলো থেকে ১টা ৩৫ মিনিটের পর শেয়ার ক্রয় অথবা বিক্রয়ের আদেশ দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে লেনদেন চিত্র দেখা গেছে।
লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্রোকারেজ হাউজগুলোর মধ্যে এআইবিএল ক্যাপিটাল মার্কেট সার্ভিস, ব্যাংক এশিয়া, ডিএসই’র সাবেক সভাপতি আবদুল হকের রয়েল গ্রিন, সাবেক জ্যৈষ্ঠ সহ-সভাপতি আহমেদ রশিদ লালীর রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস লিমিটেডর মতো শীর্ষ ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে।
ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, নতুন সফটওয়্যারে প্রায় ১৩০টির মতো সার্ভার রয়েছে। এই সার্ভারগুলোর অধীনে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ৬টি সাইলোতে বিভক্ত করা হয়েছে। এক একটি সাইলোতে ৪০টির মতো করে প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে সফটওয়্যারে সমস্যা সৃষ্টি হলে একটি সাইলোর লেনদেন (ক্রয়-বিক্রয় আদেশ) বন্ধ হয়ে যায়। এই সাইলোটিতে ৪১টি ব্রোকারেজ হাউজ রয়েছে।
ডিএসই’র উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, সমস্যা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই ডিএসই থেকে ফ্লাক্সট্রেডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ডিএসই’র দায়িত্ব থাকা ফ্লাক্সট্রেডের প্রতিনিধিরা ও ডিএসই’র কর্মকর্তারা সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। আগামীকাল বুবধার থেকে ব্রোকারেজ হাউজগুলো আবার স্বাভাবিক লেনদেন করতে পারবে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ডিএসই চাইলে সফটওয়্যার রিস্টার্ট (বন্ধ করে আবার চালু) দিয়েই সমস্যার সমাধান করতে পারতো। কিন্তু এটি করতে গেলে ফোর্সসেল’র মতো ঘটনা ঘটতে পারতো। যে কারণে রিস্টার্ট দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বপন কুমার বালা বলেন, টেকনিক্যালগত কিছু সমস্যা হয়েছিলো। যে কারণে ৪১টির মতো ব্রোকারেজ হাউজে সমস্যা দেখা দেয়। সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে। আশা করি বুধবার থেকে ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে স্বাভাবিক লেনদেন হবে।
এদিকে একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা জানান, শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে না পেরে বিনিয়োগকারীরা ব্রোকারেজ হাউজের উপর ক্ষুব্ধ ও হতাশ হন। কেউ কেউ ব্রোকারহাউজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাগারাগি করেন।
রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস লিমিটেডর এক বিনিয়োগকারী জানান, দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের দিকে তিনি শেয়ার ক্রয়ের আদেশ দেন। কিন্তু দায়িত্বরত ব্যক্তি কিছুতেই তার ক্রয় আদেশটি দিতে পারেন নি। এমনকি এ সময় বিক্রয় আদেশ দিলেও একই সমস্যা হয়। অথচ কম্পিউটারের মনিটরে লেনদেন চিত্র দেখা যাচ্ছিলো।
যোগাযোগ করা হলে ডিএসই’র পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, এ ধরণের কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। আমার ব্রোকারেজ হাউজে কোন সমস্যা হয়নি। একই কথা বলেন ডিএসই’র সাবেক সভাপতি আহসানুল ইসলাম টিটু।
লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়া একটি ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নতুন সফটওয়্যারের জটিলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে লেনদেনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ পরিস্থিতে এক ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ থাকায় লেনদেনে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তারপর সমস্যাটি সৃষ্টি হয়েছে লেনদেনের শেষ ঘণ্টায়। ফলে স্বাভাবিক লেনদেনের তিন ভাগের এক ভাগও দিন শেষ হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৫