ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

খেলা

জাতীয় দল নির্বাচন করতে পারবেন না গেরহার্ড

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১০
জাতীয় দল নির্বাচন করতে পারবেন না গেরহার্ড

ঢাকা: হকি দলের কোচ হিসেবে গেরহার্ড পিটার রাক কাজ করছেন প্রায় এক বছর হতে চলেছে। আনুষ্ঠানিক কোন চুক্তি ছাড়াই এতদিন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই প্রথম জাতীয় দলের বিদেশি কোচের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করতে যাচ্ছে হকি ফেডারেশন।

চুক্তিনামা তৈরি হয়ে আছে। গেরহার্ডও চুক্তির শর্তগুলো যাচাই করে দেখেছেন। হকি ফেডারেশনের দেওয়া প্রস্তাব মেনেই জাতীয় দলের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছেন তিনি। চুক্তিপত্র অনুযায়ী কোচের দায়িত্বের পরিধি বেড়েছে। জাতীয় দলের বাইরেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে গেরহার্ডকে।

চুক্তিপত্রের দায়িত্ব বিষয়ক ধারার ৪.২.১ এ আছে ১৬তম এশিয়ান গেমস পর্যন্ত জাতীয় দলের কোচ হিসেবে কাজ করবেন তিনি। পরের দুটি ধারায় (৪.২.২ ও ৪.২.৩) আছে দেশীয় কোচদের প্রশিক্ষণ এবং জেলা পর্যায়ের খেলোয়াড়দের উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দেবেন জাতীয় দলের কোচ। সঙ্গে বাংলাদেশের হকির উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকাও পালন করবেন এই জার্মান কোচ।

আগের মেয়াদে স্থায়ী বা লিখিত চুক্তিপত্র না থাকায় নিজের ইচ্ছা মতো কাজ করতেন গেরহার্ড। এতে তার কাছ থেকে পুরো সুবিধা নিতে পারেনি বাংলাদেশ। চুক্তি না থাকলেও হকি ফেডারেশন থেকে পারিশ্রমিক ঠিকই নিয়েছেন গেরহার্ড। মাসে দুই হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া হতো তাকে। সঙ্গে আনুষঙ্গীক সুযোগ সুবিধা। সে তুলনায় জাতীয় দল নিয়ে খুব একটা কাজ করেছেন বলে দাবি করতে পারবেন না কোচ। উল্টো তার গাফিলতির কারণেই এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি বাংলাদেশ।

জাতীয় দলের ১৯ খেলোয়াড়কে ইউরোপে খেলার সুযোগ করে দিলেও বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই মাঠে নামার সুযোগ পাননি। অনেকে জার্মানিতে অলস সময় পার করেছেন। অর্থ কষ্ট এবং খাবারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করে দেশে ফিরেছেন।

পিটারের সহকারী হিসেবে দুইজন স্থানীয় কোচকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও পিটার তাদেরকে খুব একটা পাত্তা দেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি খেলোয়াড়দের সঙ্গেও তার সম্পর্ক খুব একটা সুখের ছিলো না। কোচের বিরুদ্ধে রীতিমতো বিদ্রোহ করেছিলেন খেলোয়াড়রা।

এখানেই শেষ নয় জাতীয় দল নির্বাচক এবং ফেডারেশন কর্মকর্তাদের কোন কথাই শুনতে না পিটার। নিজের ইচ্ছা মতো দলে যাকে ইচ্ছা নিয়েছেন আবার বাদও দিয়েছেন। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে তৃক্ত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো কোচের সঙ্গে।

অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই এবার চুক্তির আওতায় আনা হচ্ছে কোচকে। কোচের প্রিয়ভাজন ও ব্যবসায়িক অংশিদার হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার জামিলকে চুক্তির বিষয়ে দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। চুক্তি থেকে শুরু করে এশিয়ান গেমস পর্যন্ত কোচের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন খোদ হকি ফেডারেশনের সভাপতি এয়ার মার্শাল শাহ মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান।

নতুন চুক্তিতে প্রতিমাসে তিন হাজার মার্কিন ডলার বেতন পাবেন গেরহার্ড। চুক্তিপত্রে উল্লেখ আছে বেতন ছাড়াও থাকা, খাওয়া, স্থানীয় যাতায়াত এবং চিকিৎসা সুবিধা পাবেন কোচ। তবে কোন ধরণের জটিল ব্যাধির জন্য অপারেশন খরচ দেওয়া হবে না। দেশে যাওয়া এবং আসার জন্য একবার বিমান ভাড়া দেওয়া হবে।

কোচ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে যে কোন সময় বরখাস্ত হবেন। তবে অসুস্থতাজনিত কারণে সর্বোচ্চ এক মাস তিনি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে পারবেন। এর বেশি সময় হলেই দায়িত্ব থেকে তাকে সরিয়ে দিতে পারবে ফেডারেশন।

জাতীয় দল নির্বাচনের কোচের কোন এখতিয়ার নেই চুক্তিপত্রে। নির্বাচকরাই দল সাজাবেন। সেখানে নির্বাচকদের কাছে নিজের মতামত দিতে পারবেন তিনি।  

এশিয়ান গেমসের আগে এবার ১৮ জন খেলোয়াড়কে জার্মানিতে নিয়ে যাচ্ছেন কোচ। সেখানে খেলোয়াড়দের দেখভাল করতে হবে তাকে। খেলোয়াড়রা এবার অসুবিধা বা সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত হলে তার দায় নিতে হবে কোচকে। এজন্য ক্ষতিপূরণও গুনতে হবে বলে নতুন চুক্তিপত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘন্টা, আগস্ট ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।